Advertisement
E-Paper

কেউ পালালেন অটোয় চড়ে, কেউ উঠে পড়লেন লঞ্চে! যে ভাবে সন্দেশখালি ছাড়লেন ইডি অফিসারেরা

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি আধিকারিকের একটি দল। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছিল।

অটোয় করে যাচ্ছেন ইডি আধিকারিকেরা।

অটোয় করে যাচ্ছেন ইডি আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩৮
Share
Save

নিয়োগ ও রেশন দুর্নীতি মামলায় রাজ্যে শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ক গ্রেফতার হয়েছেন ইডির। গ্রেফতার হওয়া মন্ত্রীদের তালিকায় রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (নিয়োগ মামলা) এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (রেশন মামলা)। তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং জীবনকৃষ্ণ সাহাও গ্রেফতার হয়েছেন নিয়োগ ‘দুর্নীতি’তে। কিন্তু কোথাও সন্দেশখালির মতো এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে! সেখানে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতে গিয়ে এমন বাধার মুখে পড়তে হল যে, শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হল ইডি আধিকারিকদের দল ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুধু তা-ই নয়, বিক্ষোভের মুখে পড়ে এক ইডি আধিকারিকের মাথাও ফেটেছে। ওই পরিস্থিতিতে কোনও ক্রমে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা!

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি আধিকারিকের একটি দল। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির দিকে তাঁরা যাওয়ার চেষ্টা করলেই রুখে দাঁড়ান গ্রামবাসীদের একাংশ। যাঁরা শাহজাহানের অনুগামী বলে দাবি। ইডি আধিকারিকেরা তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি। এর পরেই তাঁরা দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, সেই সময়েই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর করা হয়। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরও। শেষমেশ ধাওয়া করে ইডি আধিকারিকদের এলাকাছাড়া করা হয়। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের গাড়িতে। সেই সময়েই তিন আধিকারিক জখম হয়েছেন বলে খবর।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ভাঙা গাড়িতে করেই ঘটনাস্থল থেকে ফিরে যান ইডি আধিকারিকেরা। প্রথমে তাঁরা বাসন্তী হাইওয়েতে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করেন। তার পর সেখান থেকে অটোয় করে কয়েক জন ফিরে যান। বাকিরা লঞ্চে করে ফিরে যান স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দেশখালিতে যে তিন আধিকারিক জখম হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন হলেন সহকারী ডিরেক্টর রাজকুমার রাম। তিনি বাইরে থেকে এসেছিলেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে তাঁর সিটি স্ক্যান করানো হয়। জখম হওয়া বাকি দুই আধিকারিকের নাম অঙ্কুর এবং সোমনাথ দত্ত। অভিযোগ, আক্রান্ত হয়েছেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। তাঁদের গাড়ি ও ক্যামেরা ভাঙা হয়েছে বলে দাবি।

সন্দেশখালির ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপ চেয়েছে রাজ্য বিজেপি। এএনআই তদন্ত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠিও দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাল্টা তৃণমূলের কুণাল ঘোষ বলেন, “সন্দেশখালির ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু শুধু তৃণমূলকে বেইজ্জত করবে বলে বিজেপির নির্দেশে কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তল্লাশির নামে প্ররোচনা দিচ্ছে।” তাঁর সংযোজন, ‘‘এখন ইডি বা সিবিআই কোথাও গেলে স্টেট গভর্মেন্টকে লুপে নিচ্ছে না। স্টেট পুলিশকে লুপে নিচ্ছে না। অ্যাট লিস্ট চিফ সেক্রেটারিকেও যদি বলে রাখে, তা হলে তো অন্তত এইটা থাকবে যে, কোন এলাকাটা সেনসেটিভ, কোথায় কোন সময়ে কী হয়ে আছে, এগুলি না জেনে নিজেদের মতো করে। ও দিকে উস্কাচ্ছে শুভেন্দুরা, আর এ দিকে হাল্লার রাজার সেনারা গিয়ে গন্ডগোলটা করছে। সেই কারণে এই জিনিসটা তৈরি হয়েছে। একটা শান্তিপূর্ণ রাজ্যকে কেবলমাত্র বদনাম করার জন্য এই কাণ্ডগুলি করা হচ্ছে।’’

ED

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}