সেই কিশোরের দেহ। গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
পোড়া গন্ধটা মুছে গেলেও আতঙ্কের ছায়াটা রবিবারও যেন ছুঁয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে। সঙ্গে দোসর, অব্যবস্থা। হাসপাতালের সেই ছন্নছাড়া চেহারাটা আরও উস্কে দিয়েছে পিঁপড়ে-খাওয়া এক কিশোরের মৃতদেহ।
নাম জিৎ ভকত (১৩)। শুক্রবার বিকেলে, নবগ্রামের পলসন্ডা গ্রামের ছেলেটি বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলার পরে স্নান করতে গিয়ে পুকুরে তলিয়ে যায়। দেহ তুলে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে নিয়ে যান এলাকার মানুষ। তখন সন্ধ্যা। তাই সে রাতে আর ময়নাতদন্ত হয়নি। জিতের বাবা মোহন জানান, পরদিন বেলা গড়িয়ে গেলেও ময়নাতদন্তে হাত লাগানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এক বার এ ঘরে, এক বার ও ঘরে দৌড়দৌড়ি করেছি। কোনও ফল হয়নি। তার মাঝেই আগুন লাগল। কোনও রকমে বেরিয়ে এলাম।’’
বিকেল থেকে ফের ছেলের দেহ পেতে তদ্বির শুরু করেন। ‘‘কিন্তু কেউ কানেই তুলল না। এক চিকিৎসক তো মুখের উপরেই বলে দিলেন, ‘মরা ছেলে নিয়ে এখন মাথা ব্যথা, দেখছ না আগুন লেগেছে!’’ ফলে শনিবারও কেটে গেল। রবিবার ফের সকাল থেকে মোহনবাবু হত্যে দিলেন হাসপাতালে। ঘণ্টা দুয়েক পরে, মোহনবাবুর সামনেই ওই ঘর থেকে বের করা হয় তাঁর ছেলের ফুলে ফেঁপে ওঠা দেহ। মোহনবাবুর অভিযোগ, ‘‘কী বলব, সারা দেহে পিঁপড়ে থিক থিক করছে!’’ যা দেখে চিকিৎসকেরা তড়িঘড়ি ফের তার শরীর চাদর দিয়ে ঢেকে দেন বলে জানায় কিশোরের পরিবার। মোহনবাবুদের বাইরে দাঁড়াতে বলা হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যে ডাক আসে। মোহনবাবু বলছেন, ‘‘ওরা তখন আমাদের সরাতে পারলে বাঁচে!’’
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার প্রভাসচন্দ্র মৃধা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের জন্য সাধারণত চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতেই হয়। তার পরেও কেন দেহ ফেলে রাখা হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনটা হওয়ার কথা নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy