—প্রতীকী ছবি।
বড় বড় ভবন আছে। টেবিল-চেয়ার, ব্ল্যাকবোর্ড দিয়ে সাজানো শ্রেণিকক্ষও রয়েছে সারি সারি। অভাব নেই শিক্ষকেরও। কিন্তু নেই পড়ুয়া। তাই অধিকাংশ ঘরই তালাবন্ধ। এটাই রাজ্যের অধিকাংশ হোমিয়োপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের বর্তমান ছবি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে হোমিয়োপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ১০। বেসরকারি কলেজ ছ’টি এবং সরকারি চারটি। প্রতিটি কলেজে আসন-সংখ্যা ৫০। কিন্তু ২০১৮ সালে ভর্তির প্রক্রিয়া সাঙ্গ হওয়ার পরেও অধিকাংশ আসন খালি। কেন? রাজ্য হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক সংগঠনের তরফে চিন্ময় মোহান্তি বলেন, ‘‘হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসায় অনেক ক্ষেত্রে আধুনিক ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ছাড়পত্র না-থাকায় সমস্যা হচ্ছে। জটিলতার জেরেই হোমিয়োপ্যাথি পড়ার আগ্রহ কমছে রাজ্যে।’’
হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসায় কিছু ক্ষেত্রে আধুনিক ওষুধ লাগে বলেই ২০১৪ সালে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে। তাতে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেশ কিছু ওষুধ ব্যবহারের ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণ আর হয়নি। ২০১৭ সালে ফের বিকল্প ধারার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন প্রশিক্ষণ হয় আয়ুর্বেদ ও ইউনানি চিকিৎসকদের। কিন্তু বাদ পড়ে যায় হোমিয়োপ্যাথি। কেন আয়ুর্বেদ আর ইউনানির ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হল, হোমিয়োপ্যাথিই বা বাদ পড়ল কেন, তার জবাব মিলছে না। বিশেষ প্রশিক্ষণ আর আধুনিক ওষুধ ব্যবহার নিয়ে নীতি-জটিলতায় ছাত্রছাত্রীরা হোমিয়োপ্যাথি পড়তে ঝুঁকছেন না বলেই চিকিৎসক শিবিরের একাংশের অভিমত।
রাজ্যের অন্য সব হোমিয়োপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজে আসন ফাঁকা থাকলেও সল্টলেকের কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হোমিয়োপ্যাথির সব আসন পূর্ণ। কী ভাবে? চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, আধুনিক ওষুধ ব্যবহারের ছাড়পত্র পাওয়া, না-পাওয়াতেই ছবিটা আলাদা হয়ে যাচ্ছে। যাঁরা কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করছেন, প্রশিক্ষণ নেওয়ায় তাঁরা আধুনিক ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। অন্য কলেজের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের সুযোগ নেই। তাই ছাড়পত্রও মিলছে না।
হোমিয়োপ্যাথি প়ড়ুয়ার অভাব আখেরে গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ। প্রত্যন্ত এলাকায় অনেক ক্ষেত্রে বিকল্প ধারার চিকিৎসকেরাই স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম। হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসকদের অন্য সংগঠন অল বেঙ্গল হোমিয়োপ্যাথি ফোরামের তরফে চিকিৎসক কে এ মোহিত বলেন, ‘‘ছাড়পত্রের অভাবে হোমিয়োপ্যাথি পড়ার আগ্রহ কমছে। এর পরিণামে গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসক-সঙ্কট দেখা দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy