মন ঘিসিঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত।
এখনও কট্টরপন্থীদের সবাই বিমল গুরুঙ্গকে ছেড়ে বিনয় তামাঙ্গের শিবিরে যোগ দেননি। গুরুঙ্গও বারবার দিল্লি গিয়ে আলোচনায় বসার কথা বলছেন। তাঁকে সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে।
এই অবস্থায় ‘হিল এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কমিটি’ গড়ে রাজ্য সরকার তার দায়িত্ব দিল জিএনএলএফ প্রধান মন ঘিসিঙ্গকে। জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ড গত দেড় মাস ধরে কাজ করলেও কেন হঠাৎ নতুন একটি কমিটি গঠিত হল, তা নিয়ে এর মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে পাহাড়ে।
পাহাড়ের একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, জিটিএ-তে সুবাস ঘিসিঙ্গের পুত্র মনকেও রাখা হয়েছিল। কিন্তু জিএনএলএফের বক্তব্য, তারা বরাবর জিটিএ-র বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তাই সেখানে পদ গ্রহণ করা সম্ভব নয় মনের পক্ষে। সেই কারণে এত দিন জিটিএ থেকে তো বটেই, সর্বদল বৈঠক থেকেও দূরে থাকতে চাইছিল গোটা দল।
এই অবস্থায় আচমকাই নতুন কমিটি গঠিত হয়। তার মাথায় আছেন মন। ভাইস চেয়ারম্যান আর এক জিএনএলএফ নেতা মহেন্দ্র ছেত্রী। এক জন অতিরিক্ত জেলাশাসককে এই কমিটি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত গাড়ি এবং অফিস পাবেন ওঁরা।
নতুন উন্নয়ন কমিটিতে রাখা হয়েছে পাহাড়ের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী অজয় এডওয়ার্ডকে। গ্লেনারিজের মালিক অজয় জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও। রয়েছেন দার্জিলিং পুরসভার প্রাক্তন মোর্চার কাউন্সিলর শুভময় চট্টোপাধ্যায়। পুরভোটের আগে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
কিন্তু এতগুলি উন্নয়ন পর্ষদ এবং জিটিএ-র পরে আবার নতুন কমিটি কেন? তাদের কাজই বা কী? এই নিয়ে কোনও স্পষ্ট ধারণা কারও নেই। তবে পাহাড়-সমতলের একাংশের বক্তব্য, গুরুঙ্গ যাতে নতুন করে
জমি খুঁজে না পান, সে জন্য পাহাড়ের সব নেতাকেই এক ছাতার তলায় আনতে চাইছে রাজ্য। মন যে হেতু জিটিএ-তে যাবেন না, তাই তাঁর জন্য আলাদা কমিটির ব্যবস্থা হল। একই সঙ্গে এই কমিটিকে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অর্থ সাহায্যও করতে পারবে রাজ্য।
মহেন্দ্র ছেত্রী জানান, কী কী ভাবে, কোন কোন খাতে টাকা আসবে, তা রাজ্য ঠিক করবে। তিনি বলেন, ‘‘তবে এটা একটা অস্থায়ী বন্দোবস্ত। পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান না হওয়া অবধি কমিটি কাজ করতে পারে।’’ অন্য দিকে, মোর্চার বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা মনে করছেন, রাজনৈতিক ভাবে জিএনএলএফের ক্ষোভ প্রশমিত করতেই সরকারি স্তরে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিনয় বলেন, ‘‘নতুন কমিটিতে নিয়ে এখনই কিছু বলছি না।’’
এই কমিটিকে এ দিনের বিবৃতিতে কটাক্ষ করেছেন বিমল গুরুঙ্গ। তাঁর সমর্থকেরা এখনও বলছেন, এক গুরুঙ্গকে আটকাতে আর কত কমিটি গঠন করবে রাজ্য! সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য আবার বলেছেন, ‘‘পাহাড় সমস্যা সমাধানের গভীরে না গিয়ে এ সব কী হচ্ছে! ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হচ্ছে না। এ ভাবে বেশি দিন চলবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy