Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

স্কুলে খাবার নিশ্চিত করতে নজর-জুজু

নিয়ম অনুযায়ী স্কুলে প্রতি সপ্তাহে কাজের ছ’দিনই পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়ার কথা। কিন্তু কিছু স্কুলে দুপুরের খাবার অনিয়মিত ভাবে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে স্কুলশিক্ষা দফতরে। বিশেষ করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ির একটি স্কুলের ঘটনায়। সেখানকার খুদে পড়ুয়ারা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত মিড-ডে মিল পাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এতে সরকারের শীর্ষ মহল অত্যন্ত বিরক্ত। ওখানে মিড-ডে মিলের এই অবস্থা কেন, তা জানতে চেয়ে জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তাকে শো-কজ করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৪২
Share: Save:

বিভিন্ন সময়ে নানা ভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েও স্কুলের মিড-ডে মিলে অনিয়ম ঠেকানো যাচ্ছে না। সেই জন্য এ বার রাজ্য সরকারের একেবারে শীর্ষ স্তরের নজরদারির ‘জুজু’ দেখিয়ে পড়ুয়াদের দুপুরের খাবার নিশ্চিত করতে চাইছে স্কুলশিক্ষা দফতর।

নিয়ম অনুযায়ী স্কুলে প্রতি সপ্তাহে কাজের ছ’দিনই পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়ার কথা। কিন্তু কিছু স্কুলে দুপুরের খাবার অনিয়মিত ভাবে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে স্কুলশিক্ষা দফতরে। বিশেষ করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ির একটি স্কুলের ঘটনায়। সেখানকার খুদে পড়ুয়ারা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত মিড-ডে মিল পাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এতে সরকারের শীর্ষ মহল অত্যন্ত বিরক্ত। ওখানে মিড-ডে মিলের এই অবস্থা কেন, তা জানতে চেয়ে জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তাকে শো-কজ করা হয়েছে।

বিকাশ ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘নবান্নের শীর্ষ স্তর থেকে নির্দেশ এসেছে, নিয়মিত মিড-ডে মিল সরবরাহ করা হচ্ছে কি না, তার উপরে স্কুলশিক্ষা দফতর যেন নজর রাখে। তারই ভিত্তিতে প্রত্যেক জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) স্কুলে স্কুলে যে-রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, তাতে সরকারের শীর্ষ স্তরের নজরদারির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।’’ শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, মিড-ডে মিলের দায়দায়িত্ব শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের হাতে না-রেখে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এর ভার দিলে ফল ভাল হতে পারে।

মিড-ডে মিল সরবরাহে অনিয়ম ছাড়াও খাবারের গুণমান থেকে শুরু করে চুরি পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগের অন্ত নেই। সেটাতে লাগাম পরাতে নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। কিন্তু কোনও বারেই সরকারের শীর্ষ স্তরের ক্ষোভ ও নজরদারির কথা উল্লেখ করতে হয়নি। এ বারেই নজিরবিহীন ভাবে সেটা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কেন?

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, মিড-ডে মিলে অনিয়মের নানা অভিযোগ আসছিলই। তার মধ্যে জলপাইগুড়ির ওই স্কুলের ঘটনাটি সামনে আসে। নানা অজুহাতে সেখানে যে প্রায়ই দুপুরের খাবার দেওয়া হয় না, সেই খবর পৌঁছে যায় সরকারের উপর মহলে। সরকারের শীর্ষতম স্তর থেকে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি দ্রুত এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আসে। তার পরেই সব ডিআই-কে নির্দেশ দেওয়া হয়, মিড-ডে মিল নিয়ে শীর্ষ স্তরের নজরদারির কথা জানিয়ে সব স্কুলে সতর্কবার্তা পাঠাতে হবে।

তার পরেই স্কুলগুলিতে নতুন নির্দেশ পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, মিড-ডে মিল পড়ুয়াদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। গোটা কর্মকাণ্ডে সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে নজর রাখা হচ্ছে। এতে কোনও রকম অনিয়ম বা দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।

স্কুলে দুপুরের খাবার নিয়ে এই ধরনের গোলমালের পিছনে অন্য একটি কারণ আছে বলে মনে করে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। ওই সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, পঠনপাঠন বজায় রেখে শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের পক্ষে মিড-ডে মিলের তদারক করা বেশ অসুবিধাজনক। দুপুরের খাবার সরবরাহের দায়িত্ব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে দেওয়া উচিত। ‘‘নইলে আবার এ ভাবে সরকারের কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। সেটা ভাল হবে না,’’ বলছেন স্বপনবাবু।

অন্য বিষয়গুলি:

Surveillance Mid Day meal Obliquity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE