Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Higher Secondary

প্র্যাক্টিক্যালের কী হবে, সঙ্কট উচ্চ মাধ্যমিকে

অতিমারির মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একাংশ অনলাইনে ক্লাস করলেও স্কুলে গিয়ে কোনও ক্লাসই করতে পারেনি। প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসও হয়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৫৩
Share: Save:

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু আগামী বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছে সেটা হয়ে উঠেছে মহাসমস্যা। পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের প্রশ্ন, করোনার দৌরাত্ম্যে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস না-করেই কি বসতে হবে পরীক্ষায়? নাকি প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস না-হলে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষাও হবে না? তাতে তো সমস্যা হবে সুদূরপ্রসারী। কারণ, প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা না-দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে গেলে আখেরে ক্ষতি তো হবে পরীক্ষার্থীদেরই। এই অবস্থায় শিক্ষকদের একাংশ চাইছেন, করোনা-কালের স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্তত কিছু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করার অনুমতি দিক শিক্ষা দফতর।

অতিমারির মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একাংশ অনলাইনে ক্লাস করলেও স্কুলে গিয়ে কোনও ক্লাসই করতে পারেনি। প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসও হয়নি। স্কুল না-খুললে কোনও ভাবেই সেই ক্লাস সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা। প্রশ্ন উঠছে, পরীক্ষা যদি কিছুটা পিছিয়েও

যায়, তা হলেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা কি প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে পারবে?

মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানান, উচ্চ মাধ্যমিকে মূলত পাঁচটি বিষয়ের (পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীবনবিজ্ঞান, ভূগোল, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন) প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হয়। এ ছাড়া সঙ্গীত, শারীরশিক্ষার মতো কিছু বিষয়ে প্র্যাক্টিক্যাল আছে। এই সব বিষয়ে হাতে-কলমে পরীক্ষানিরীক্ষা ছাড়াই পড়ুয়ারা যদি পরের ক্লাসে উঠে যায়, উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে তারা হাবুডুবু খাবে। “৩০ নম্বরের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা আদৌ হবে কি না, সেই বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষক সকলেই অন্ধকারে। পরীক্ষা না-হলে নম্বর কী ভাবে দেওয়া হবে, সেটাও অনিশ্চিত। পড়ুয়ারা হাতে-কলমে পদার্থবিদ্যার কোনও পরীক্ষা করারই সুযোগ পায়নি। ওদের স্কুলে ডেকে যে কয়েকটা ক্লাস করাব, সেটা সম্ভব হয়নি করোনার জন্য। হাতে-কলমে ইলেক্ট্রনিক্স-ইলেক্ট্রিক্যালসের পরীক্ষা না-করে পড়ুয়ারা পদার্থবিদ্যার উচ্চতর পাঠ নেবে কী ভাবে” প্রশ্ন তুলেছেন দীপঙ্করবাবু। একই সুরে উত্তর ২৪ পরগনার একটি স্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষক বিপ্লব দাস জানান, প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস না-হওয়ায় অণুবীক্ষণ যন্ত্র কী করে দেখতে হয়, পড়ুয়ারা সেটাও শেখেনি। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দেখতে না-জানলে ছাত্রছাত্রীরা উচ্চতর ক্ষেত্রে জীববিদ্যা নিয়ে পড়বে কী ভাবে? জয়েন্ট এন্ট্রান্স পাশ করে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে অগাধ জলে পড়বে তারা। প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস না-করলে বায়োকেমিস্ট্রি বা জৈব রসায়নের কিছু বিষয় জানাই যায় না। প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস না-হলে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার কাজও শেখা যাবে না।

কোচবিহারের একটি স্কুলের রসায়নের শিক্ষক বীরেশচন্দ্র রায়ের প্রশ্ন, শিক্ষা দফতর যদি নির্দেশ দেয়, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে সব পড়ুয়াকে প্র্যাক্টিক্যালে কিছু নম্বর দিতেই হবে, তাতে ছেলেমেয়দের কোনও লাভ হবে কি? অজৈব রসায়নের বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা খুবই জরুরি। এগুলো না-জেনে উচ্চশিক্ষা নিতে গেলে সমস্যা হবে ছাত্রছাত্রীদের।

এই অবস্থায় শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশের দাবি, ডিসেম্বরে না-হোক, জানুয়ারিতে অন্তত প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের জন্য পড়ুয়াদের স্কুলে আসার অনুমতি দেওয়া হোক। “আমরা শিক্ষা দফতরকে অনুরোধ করব, পর্যায়ক্রমে পড়ুয়াদের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে দেওয়া হোক। এক-এক বারে ১০ জন পড়ুয়া স্কুলে এসে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে পারে। শিক্ষা দফতর রাজি হলে আমরা অভিভাবকদেরও অনুরোধ করব, তাঁরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই ক্লাস করতে কিছু ক্ষণের জন্য ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠান,” বলেন সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Higher Secondary Practical Class
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy