প্রতীকী ছবি।
পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া ধর্ষিত নাবালিকার গর্ভপাত করানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের তরফে এসএসকেএম হাসপাতালকে গর্ভপাত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের নির্দেশ, যত দ্রুত সম্ভব ওই নাবালিকার গর্ভপাত করাবে এসএসকেএম হাসপাতাল। তমলুক হাসপাতালে পরিকাঠামো না থাকায় এসএসকেএম হাসপাতালে ওই নাবালিকাকে নিয়ে আসতে হবে। তমলুক হাসপাতাল হাই কোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানায়, ওই নাবালিকার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা বিচার করে দেখা গিয়েছে গর্ভপাত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চারটি বিভাগের দক্ষ চিকিৎসকেরা নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করবেন। মেডিক্যাল বোর্ডে অবশ্যই রাখতে হবে শিশুরোগ এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চিফ মেডিক্যাল অফিসার এবং তাম্রলিপ্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে নাবালিকার স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। বিচারপতি জানিয়েছিলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত।
১১ বছরের মেয়ে ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। জানতে পেরে গর্ভাবস্থার ২৪ সপ্তাহ পরে মেয়ের গর্ভপাত করানোর অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা-মা। ওই নাবালিকা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। কয়েক মাস আগে তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতনের পাশাপাশি গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই নাবালিকার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়টি এত দিন জানতে পারেনি পরিবার। গত মাসে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তারা তা জানতে পারে। নাবালিকার মানসিক এবং শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্টের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। এর পর হাসপাতালের তরফে তাদের জানানো হয়, উচ্চ বা শীর্ষ আদালতের অনুমতি ছাড়া এই গর্ভপাত কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।
আইন অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কোনও মহিলা, নাবালিকা বা নাবালিকার পরিবার ২০ সপ্তাহ সময় পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে চেয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিশেষ পরিস্থিতিতে তা ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ানো যায়। তার পরে গর্ভপাত করাতে গেলে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয় নাবালিকার পরিবার।
পরিবারের আইনজীবী প্রতীক ধর এবং আইনজীবী চিত্তপ্রিয় ঘোষ তাঁদের সওয়ালে জানিয়েছিলেন, মেয়েটি একটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। এখন সন্তান জন্ম দেওয়ার মতো তার মানসিক অবস্থা নেই। তাঁদের বক্তব্য, নাবালিকার পরিবার আর্থিক ভাবে খুবই দুর্বল। সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও কম। আইন সম্পর্কে তাঁরা একেবারেই ওয়াকিবহাল নন। সেই কারণেই গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানাতে পর্যন্ত দেরি করেছে তারা। গত মাসে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের সাহায্যে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানায় এফআইআর দায়ের করেছে নাবালিকার পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy