Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Hanskhali

Hanskhali gang rape and murder case: ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তুতি, নেওয়া হল ধৃতদের রক্ত

এ দিন মৃতার বাড়িতে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মৃতার মা কেঁদে বলেন, তাঁরা টাকাকড়ি চান না, অপরাধীদের সাজা চান। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সেলিম যেমন প্রশ্ন তোলেন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২ ০৬:১৯
Share: Save:

নদিয়ায় কিশোরীর ধর্ষণ-মৃত্যুর ঘটনায় ধৃতদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করল সিবিআই। রবিবার সংগৃহীত সেই নমুনা ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে।

মৃতার বাড়ি ছাড়াও যে বাড়িতে ধর্ষণ করা হয়েছিল সেখানে বেশ কয়েকটি রক্তমাখা জামাকাপড় পাওয়া গিয়েছে। সেগুলির ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য অভিযুক্ত ও ধর্ষিতার রক্তের নমুনা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু মেয়েটির মৃতদেহ দাহ হয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। শনিবার তার বাবা-মায়ের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রবিবার তিন অভিযুক্তের রক্তের নমুনা নেওয়া হয়। সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধাপে ধাপে ফরেন্সিক ও ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” রাজ্য পুলিশ ঘটনার যোগসূত্রে এখনও পর্যন্ত ১১ জনের গোপন জবানবন্দি নিয়েছে।

শনিবার দিনভর মৃতার মা-বাবা ও জেঠতুতো দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়ি পৌঁছে দেয় সিবিআই। পরিবার সূত্রের খবর, মা-বাবা দু’জনেই দেহে-মনে বিধ্বস্ত। এ দিন দাদার বাড়ির বারান্দায় বসে মৃতার বাবা বলেন, “আমার ৫৮০ ব্লাড সুগার। শরীর যেন চলতে চাইছে না। আর আমার স্ত্রীকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।”

শনিবারই এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত রঞ্জিত মল্লিক ওরফে লাদেনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এ দিন রানাঘাট আদালত থেকে তাকে তারা নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে স্কুল ছেড়ে দিয়েছিল। কখনও কলকাতায়, কখনও অন্য রাজ্যে সে রাজমিস্ত্রির কাজে যেত। পড়শিদের অনেকেরই দাবি, তিন বন্ধুই মদ ছাড়াও অন্য নানা নেশা করত।

লাদেনের বাবা ফটিক মল্লিক ওড়িশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ছেলের খবর শুনে সেখান থেকে তিনি বাড়ি চলে এসেছেন। তাঁর দাবি, রঞ্জিত নিজে বাড়িতে থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু সোহেল গয়ালি ওরফে ব্রজ গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁরাই জোর করে তাকে করিমপুরে মামার বাড়িতে রেখে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “ছেলে বলেছিল, সে কোনও অন্যায় করেনি। তা হলে কেন সে পালিয়ে বেড়াবে? আমরা ওর কথা শুনিনি।” তাঁর দাবি, “গত ৪ এপ্রিল বিকেলে ও ব্রজর বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে থাকলেও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত নয়।”

লাদেনের বাবার দাবি, “প্রভাকর আর আমার ছেলে ঘরের বাইরে বসে বিয়ার খাচ্ছিল। ভিতরে মেয়েটা আর ব্রজ ছিল। ওরা কী করেছে না করেছে, আমার ছেলে জানে না। ওর নেশা হয়ে যাওয়ায় প্রভাকর বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়। আমার ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে।” যদিও নাবালিকার সঙ্গে সহবাস মানেই তা আইনের চোখে ধর্ষণ এবং তখন যদি আশপাশে আরও কেউ হাজির থাকে, তা গণধর্ষণ হিসেবে সাব্যস্ত হয়।

এ দিন মৃতার বাড়িতে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মৃতার মা কেঁদে বলেন, তাঁরা টাকাকড়ি চান না, অপরাধীদের সাজা চান। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সেলিম যেমন প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “সিবিআই যেন তদন্তকারী এজেন্সি হিসাবে কাজ করে। শাসক দলের এজেন্সি হিসাবে কাজ না করে।” তবে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের ফেসবুক পোস্টে সেলিমের সঙ্গে ছবিতে মৃতার মায়ের মুখ দেখা যাওয়া নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কেননা পকসো আইন অনুযায়ী নাবালিকার যৌন নিগ্রহের ক্ষেত্রে পরিচয় গোপন রাখা আবশ্যক। রাতে সৃজন বলেন, “মৃতার পরিবারের কারও পরিচয় আমরা ওই ছবির সঙ্গে দিইনি। ছবিটি আমরা সরিয়ে নিচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hanskhali Gangrape Rape victim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE