Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

তিন সপ্তাহেও খোঁজ নেই হায়দরদের

ঈদের মুখেই ফোন এসেছিল নয়াগ্রামের বাড়িতে ছেলেমেয়েদের জন্য জম্মুর বাজার থেকেই কেনাকাটা সেরে রেখেছেন। ছুটি পেলেই গ্রামে ফিরবেন। অন্য জনের ফোন আসত প্রতি রাতে। ঈদের পরে সেই ফোন আর আসেনি। রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে বছর কয়েক ধরেই জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলায় ছিলেন বীরভূমের ওই অজ গ্রামের জুলফিকর শেখ আর হায়দর আলি।

হায়দরের অপেক্ষায় পরিবার। ছবি: অনির্বাণ সেন

হায়দরের অপেক্ষায় পরিবার। ছবি: অনির্বাণ সেন

সাবির ইবন ইউসুফ ও অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
শ্রীনগর ও মুরারই শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫১
Share: Save:

ঈদের মুখেই ফোন এসেছিল নয়াগ্রামের বাড়িতে ছেলেমেয়েদের জন্য জম্মুর বাজার থেকেই কেনাকাটা সেরে রেখেছেন। ছুটি পেলেই গ্রামে ফিরবেন। অন্য জনের ফোন আসত প্রতি রাতে। ঈদের পরে সেই ফোন আর আসেনি। রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে বছর কয়েক ধরেই জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলায় ছিলেন বীরভূমের ওই অজ গ্রামের জুলফিকর শেখ আর হায়দর আলি। ঈদের রাতে তাঁদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। টেনে পুলিশের জিপে তোলা হয়েছিল জুলফিকরের ভাই রবিউলকেও। কেন? জঙ্গি মোকাবিলায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ বাহিনী ‘কার্গো পুলিশ’-এর দাবি ছিল বর্ধমান বিস্ফোরণের সুতোয় জড়িয়ে গিয়েছেন ওঁরা।

৬ অক্টোবর, কনিশপুরা গ্রাম থেকে তাঁদের আটক করার ঘণ্টা পাঁচেক পরেই অবশ্য রেহাই দেওয়া হয়েছিল রবিউলকে। কিন্তু তাঁর দাদা জুলফিকর কিংবা নয়াগ্রামে তাঁদের পড়শি যুবক হায়দর? জেরার পরে ওই দু’জনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, বলে হাত ঝেড়ে ফেলেছে বারামুলা থানা। কিন্তু, জুলফিকর-হায়দরের পরিণতি কী হল, ঘটনার তিন সপ্তাহ পরে কোথায় তাঁরা? খোঁজ মেলেনি।

জঙ্গি প্রতিরোধে কাশ্মীরের ওই বিশেষ পুলিশ বাহিনি সূত্রে দাবি, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরের দিনই এনআইএ-র একটি দল কাশ্মীরে আসে। স্থানীয় পুলিশ কর্তাদের কাশ্মীরের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে তার হদিস করতে বলেন তাঁরা। খোঁজ নিয়ে স্থানীয় পুলিশ জানতে পারে মোবাইলের ওই সিমটি কেনা হয়েছিল জুলফিকার শেখের নামে। সেই সূত্রেই জুলফিকরদের বর্ধমান-যোগ।

জুলফিকরের ভাই রবিউল অবশ্য ওই ঘটনার পরেই ‘আতঙ্কিত’ হয়ে পাহাড় ছেড়ে ফিরে আসেন তাঁর গ্রামে। প্রায় দশ বছর কাশ্মীরের বিভিন্ন আপেল বাগানে দিন-মজুরি এবং রাজমিস্ত্রির কাজ করা রবিউল বলছেন, “বছর খানেক হল দাদা কাশ্মীরে গিয়ে আমার সঙ্গেই রাজমিস্ত্রির কাজ করছিল। হায়দর গিয়েছিল মাস কয়েক আগে।” তিনি জানান, বর্ধমানের ফারুক নামে এক রাজমিস্ত্রি কাশ্মীরে গিয়ে একটি ‘লোকাল’ সিম কিনেছিল। পরিচয় হিসেবে সে জুলফিকরের নাম-ঠিকানা দিয়েছিল।

রবিউলের কথায়, “খাগড়াগড়ের ওই বাড়ি থেকে পাওয়া ফোনে ওই নম্বরেই হয়তো কেউ ডায়াল করেছিল। কিন্তু সিমটি যেহেতু দাদার নামে কেনা তাই পুলিশ দাদাকে তুলে নিয়ে যায়।” কিন্তু হায়দর কেন? তার অবশ্য কোনও স্পষ্ট কারণ রবিউলের কাছে নেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE