জলমগ্ন কেশিয়াড়মির বড়বরিষা থেকে ডম্বুরকলা যাওয়ার রাস্তা।—নিজস্ব চিত্র।
প্রবল বৃষ্টি ও জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা। ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে জল ছাড়ায় মঙ্গলবার রাত থেকে জলমগ্ন হয়ে পড়ে সুবর্ণরেখা তীরবর্তী কেশিয়াড়ির নছিপুর ও বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। বুধবার সকাল পর্যন্ত জমা জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৩০টি বাড়ি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯টি ক্যাম্প অফিস খোলা হয়েছে। প্রায় এক হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে বলেও প্রশাসনিক সূত্রে খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকেই সুবর্ণরেখা নদীতে জলস্তরের উচ্চতা বাড়তে থাকে। কেশিয়াড়ির নছিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর ও দক্ষিণ ডম্বুরকোলা, হরিপুরা, পানশগঞ্জ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ডম্বুরকোলার বাসিন্দা দিলীপ পাত্র বলেন, “রাতে ক্রমে জল বাড়তে থাকে। জলে ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে। প্রায় পাঁচশো মানুষ গ্রামের একটি উঁচু জায়গায় আশ্রয় রয়েছি। দু’বস্তা মুড়ি পাওয়া গিয়েছে। এত লোকের জন্য তা অপর্যাপ্ত। আরও কিছু ত্রাণ পেলে ভাল হয়।” যদিও ভোর হতেই জল ধীরে ধীরে নেমে যায়। সুবর্ণরেখার জল ঢোকে কেশিয়াড়ির বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের রঙ্গিরা ও কুলবনি এলাকাতেও। কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অশোক রাউত বলেন, “জলে কিছু বাড়ি ক্ষতি হয়েছে। বিপদগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থাও হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে।”
কেশিয়াড়ির জলমগ্ন ছ’টি গ্রামের মানুষকে বুধবার বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হয়। সকালের দিকে নছিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বনসরিষা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হরিপুরা উচ্চ-প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঘাস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলবনি হাইস্কুল-সহ মোট ন’টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এ দিন জলমগ্ন বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন বিডিও ও মহকুমাশাসক। কেশিয়াড়ির বিডিও অসীমকুমার নিয়োগী বলেন, “যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে ধীরে ধীরে লোক আনা হচ্ছে। জেলা থেকেও আমরা কিছু ত্রাণ পেয়েছি। এখনও পর্যন্ত প্রায় একশোটি ত্রিপল বিলি করা হয়েছে।”
খড়্গপুরে মহকুমাশাসকের অফিস ও কেশিয়াড়ির ব্লক অফিসে দু’টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “গালুডি জলাধার থেকে জল ছাড়াতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। ন’টি ত্রান শিবির খোলা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ নিরাপদেই রয়েছেন। একটিও গৃহপালিত পশু মারা যায়নি। আপাতত শুকনো খাবারও দেওয়া হচ্ছে।’’
জলমগ্ন এলাকার পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার দাবিতে বুধবার জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার দফতরে ডেপুটেশন দিয়েছে এসইউসি।এসইউসির জেলা নেতা প্রাণতোষ মাইতি বলেন, “প্রশাসনের কাছে কয়েকটি দাবিই জানিয়েছি।”
অন্য দিকে, প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ঘাটাল শহর। বুধবার ভোর থেকেই ঘাটাল পুর এলকার ৯টি ওয়ার্ডে জল ঢুকতে শুরু করেছে। শহরের আড়গোড়া, শুকচন্দ্রপুর, গম্ভীরনগর, চাউলি,দুধেরবাঁধ সহ বিভিন্ন এলাকায় জলে ঢুকে পড়েছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক রাজনবীর সিংহ কাপুর বলেন, “ত্রাণ, নৌকা, উদ্ধারকারী দল, ফ্লাড শেল্টারের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy