ই-স্কুটারে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
‘‘তিরিশ বছর পরে দু’চাকায় হাত দিলাম। তাও আবার দিদিমণিকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ পালন। তাই হাত কাঁপলে বউয়ের উপর দিয়েই যাক। এই ভেবে আগের দিন রাতে বেরিয়ে পড়েছিলাম’’ — উক্তি রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের। মহড়া দিতে বুধবার রাত ১০টা নাগাদ নিজের স্ত্রীকে নতুন কেনা ই-স্কুটারে চাপিয়ে নবান্ন গিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী। হাত কাঁপেনি। তাঁর স্ত্রীও বহু দিন পরে ‘ব্যস্ত’ বরের বাইক চেপে ভরসা দিয়েছিলেন। পিছনে বসে কাঁধে হাত দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘দিদিকে নিয়ে যেতে পারবে। চিন্তার কারণ নেই। ভালই চালিয়েছ।’’
বাইক নিয়ে অকপট ফিরহাদ। জানান, শেষ বার তাঁর বাজাজ স্কুটার চালিয়েছিলেন ১৯৯৩-৯৪ সালে। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে স্কুটারে করে কখনও বারুইপুর, কখনও আমতলার দিকে যেতেন। বাচ্চাদের নিয়েও পাড়ায় ঘুরে বেড়াতেন। ফিরহাদের কথায়, ‘‘শুনেছিলাম আমতলার রাস্তায় উত্তম-সুচিত্রার বিখ্যাত ‘এই পথ যদি না শেষ হয়....’ গানের শুটিং হয়েছিল। সেই ভেবে বিয়ের পর ফাঁক পেলেই ওই রাস্তায় গিয়ে উত্তমের সেই গান গাইতাম আর স্কুটার চালাতাম। পিছনে থাকত আমার স্ত্রী।’’
একটু দম নিয়ে পর ক্ষণেই মজা করে বলেন, ‘‘কিন্তু দিদিমণি বুধবার সন্ধ্যায় ডেকে স্কুটারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলায় সত্যিই আমার মনে হচ্ছিল, এই রাত যেন তাড়াতাড়ি না শেষ হয়.....। ঘুম হয়নি। যাক উতরে গিয়েছি। সকালে দিদিকে ঠিক মতো নবান্নে পৌঁছে দিয়েছি। আর বিকেলে নিজে আট কিমি হেঁটেছি। স্কুটিতে দিদিকেও খানিকটা নিয়ে এসেছি।’’
কলকাতার পুর প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ববি জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেন, পেট্রল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে তিনি স্কুটারে বা বাইকে নবান্নে যেতে চান। কিন্তু পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদ করার জন্য বুধবারেই সচেতন ভাবে ই-স্কুটার কেনা হয়েছিল বলে জানান ফিরহাদ।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন যে ই-স্কুটারে চেপে নবান্ন যাতায়াত করেন, সেটি বুধবার তাঁর শোরুম থেকে কেনা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্কুটার সংস্থার ডিলার সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, স্থানীয় কাউন্সিলর তরুণ মণ্ডল-সহ কয়েকজন বুধবার সন্ধ্যায় কসবার রামলাল বাজার-কায়স্থপাড়ায় তাঁদের শোরুমে এসেছিলেন। বৈদ্যুতিক স্কুটার নিয়ে খোঁজখবর করেন তাঁরা। তারপর তাঁদের এক সতীর্থ স্কুটারটি কেনেন। সেটির দাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এই স্কুটারগুলির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটারের চেয়ে কম হয় বলে তা চালাতে লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে না। পরিবহণ দফতরে রেজিস্ট্রেশন-ও করতে হয় না।
ডিলারদের দাবি, এই ধরনের স্কুটারগুলি ৫-৭ ঘণ্টা চার্জ দিলে গড়ে ৬০-৭০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে পারে। ব্যাটারির চার্জ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ধরে প্রতি কিলোমিটার যেতে গড়ে ২০-২৫ পয়সার মতো খরচ হয়। তবে পেট্রল-ডিজেলের চড়া দর ও দূষণের প্রক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এমন স্কুটারে সওয়ার হওয়ায় বৈদ্যুতিক গাড়ি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে বলেও মত তাঁদের।
পুরমন্ত্রীও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চড়ার পর এবার মেয়েরা অনেকেই বাবা-মায়ের কাছে ই-স্কুটার কিনতে চাইবে। আমরাও চাই, দূষণ কমাতে ই-বাইক বেশি ব্যবহার করা হোক। আর মোদীজির জমানায় যে ভাবে তেলের দাম বাড়ছে তাতে অন্য উপায়ও নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy