কলকাতায় জে পি নাড্ডা —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল আর নির্বাচনে জিততে পারবে না। এখন স্কুটারে ঘুরছেন। এরপর দিদিকে পায়ে হেঁটে ঘুরতে হবে। নাম না করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বললেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা।
পেট্রলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কালীঘাট থেকে নবান্ন ই-স্কুটারে যেতে দেখা যায় মমতাকে। ফেরার পথেও তিনি ই-স্কুটার চালান। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিবাদ অভিনব বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে বিরোধীরা অবশ্য এর সমালোচনা করেন। বাম-কংগ্রেসের মতো বিজেপি-ও মমতার স্কুটার চালানোকে কটাক্ষ করে। বৃহস্পতিবার সায়েন্সসিটিতে 'লক্ষ্য সোনার বাংলা' কর্মসূচিতে বিদ্বজ্জনদের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নেন নড্ডা। সেখানেই মমতাকে আক্রমণ করে নড্ডা বলেন, "দিদি এখন স্কুটারে ঘুরছেন। পায়ে হেঁটে ঘুরছেন। অবশ্য দিদিকে পায়ে হেঁটেই ঘুরতে হবে। কারণ তিনি তো আগামী নির্বাচনে হেরে যাবেন।" পাশাপাশি তৃণমূল নেতাদের এ বারে ‘ঘরে বসিয়ে রাখার সময় হয়ে গিয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন নড্ডা। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষা নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, "মমতা দিদি আপনি যে ভাষা ব্যবহার করেন, তা বাংলার সংস্কৃতি নয়। প্রধানমন্ত্রী সম্বন্ধে খারাপ ভাষা ব্যবহার করেছেন। আমার নামের পাশে তো কত অলঙ্কার বসিয়েছেন। আপনার এত রাগ কেন?"
বিধানসভা ভোটে লড়াই করতে মমতাকে 'ঘরের মেয়ে' হিসেবে তুলে ধরে নতুন স্লোগান তৈরি করেছে তৃণমূল। তা নিয়েও তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করেন নড্ডা। প্রশ্ন তোলেন, "মমতা দিদি বাংলার দিদি, বাংলার মেয়ে। এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলার মেয়ে হলে সবার চিন্তা করা তাঁর দরকার ছিল। তিনি কি তা করেছেন?" এরপরই তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করে নড্ডা বলেন, "পারিবারিক হিংসা বাংলায় সর্বোচ্চ হয়। অ্যাসিড হামলায় বাংলা শীর্ষে। সবথেকে বেশি মানুষ পাচার হয় বাংলায়। আমাদের ১৩০ জন কর্মীকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাংলার মেয়ে হলে এ বিষয়ে চিন্তা করার দরকার ছিল।"
রাজ্যের সমস্ত মানুষকে বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়ার আবেদন জানিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন মমতা। যা নিয়ে মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগে নড্ডা বলেন, " মমতা দিদি আপনি টিকা দেওয়ার কথা বলছেন। টিকা তো লাগবে, আমরা দেব। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের টিকা দেওয়া হবে। তবে আমরা অন্য টিকাও লাগাব। আয়ুষ্মানের টিকা লাগানো বাকি রয়েছে। সেটা লাগাব। প্রধানমন্ত্রী সম্মান নিধির টিকা লাগাব। তোলাবাজির বিরুদ্ধে টিকা লাগাব। চাল চোরের বিরুদ্ধে টিকা লাগাব। ত্রিপল চোরের বিরুদ্ধে লাগাব। একটা নয়, আমরা মোট পাঁচটা টিকা লাগাব।" গত ১০ বছরে বাংলায় কোনও শিল্প হয়নি বলেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন নড্ডা।
বৃহস্পতিবার বিজেপি-র 'লক্ষ্য সোনার বাংলা' অনুষ্ঠানের মঞ্চে নড্ডার সঙ্গে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র এবং যাবদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীকে। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, অমিত মালব্য, সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় ও রন্তিদেব সেনগুপ্ত। বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানটি বিজেপি-র বিদ্বজ্জনদের হলেও, তেমন কাউকে দেখা যায়নি। বিজেপি-র নেতা,কর্মী-সমর্থকদের ভিড়েই ভরে যায় সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়াম। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিজেপি-র কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গেলেও কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁরা হল ছেড়ে বেরিয়ে যান। জানা গিয়েছে, ভিআইপি জায়গায় কোনও আসন ফাঁকা না থাকায়, শোভন-বৈশাখী চলে যান। তবে এ বিষয়ে তাঁরা কিছু বলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy