Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
আগুন তৃণমূলের পার্টি অফিসে, অভিযুক্ত বিজেপি

অশান্তির ধোঁয়া ইলামবাজারে

শাসকদলের কার্যালয় ও লাগোয়া এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব এবং আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। রবিবার গভীর রাত এবং সোমবার সকালে ইলামবাজার থানার ধরমপুর পঞ্চায়েতের আকোনা গ্রামের ঘটনা। সোমবারই পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আকোনা গ্রামে আগুন নেভানোর মরিয়া চেষ্টা গ্রামবাসীর। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

আকোনা গ্রামে আগুন নেভানোর মরিয়া চেষ্টা গ্রামবাসীর। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইলামবাজার শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

শাসকদলের কার্যালয় ও লাগোয়া এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব এবং আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। রবিবার গভীর রাত এবং সোমবার সকালে ইলামবাজার থানার ধরমপুর পঞ্চায়েতের আকোনা গ্রামের ঘটনা। সোমবারই পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার গভীর রাত থেকে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয় আকোনা গ্রামে। ভোর রাত পর্যন্ত চলে ওই বোমবাজি। গ্রামের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের ওই খড়ের চালের দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার খবর ইলামবাজার থানায় যায়। গ্রামে থাকা পুলিশ ক্যাম্প এবং ইলামবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরে বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় যায়। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আব্দুল ওরফে শেখ বাবু বলেন, ‘‘সোমবার সকাল আটটা নাগাদ একদিকে পুলিশ ঢুকে টহল দিচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমার রান্না ঘরের চালাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বড় পুলিশ বাহিনী আসার আগেই, ওরা এলাকা ছেড়ে পালায়। পুলিশ ও গ্রামের বাসিন্দারা জল ঢেলে আগুনে নিয়ন্ত্রণে আনেন।

তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি জাফারুল ইসলাম বলেন, “বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে। এলাকায় ওরা অশান্তি তৈরি করছে। দলীয় কার্যালয়ের পরে, সোমবার সকালে আমাদের এক সমর্থকের রান্না ঘরের খড়ের চালাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।’’

তৃণমূলের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের পাল্টা দাবি, দলের নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এবং অভিযোগ দায়ের করে ওই এলাকার সমবায় নির্বাচনকে নিষ্কণ্টক করতে চাইছে তৃণমূল। শুধু তাই নয়, সাত তারিখ রাজ্যে দলের প্রথম শহিদ ইলামবাজারের শেখ রহিমের স্মরণসভা সামনেই। সেই সভাতে জন সমাগমের কথা আঁচ করে, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।

বিজেপির স্থানীয় নেতা শেখ ইরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমার মেজ পিসির বাড়ি। পিসতুতো দুই ভাই শেখ বাবু আর শেখ আব্দুল। এটা একেবারে রাজনৈতিক বিষয় নয়। ওদেরকে ভয় দেখিয়েছে। রান্না করার সময়ে অসাবধানতার জন্য এমনটা হয়েছে। আমরা কোনও দলীয় কার্যালয় পোড়াইনি বা কোনও সমর্থকের বাড়িতে আগুন দিইনি।’’ বিজেপির বীরভূম জেলা অন্যতম সম্পাদক তথা ইলামবাজার ব্লক পর্যবেক্ষক চিত্ত রঞ্জন সিংহ বলেন, “দলীয় কার্যালয় পোড়ানোর ঘটনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওরা নিজেরাই নিজেদের দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়েছে। এ নিয়ে বার কয়েক হল, ওই একই কার্যালয়কে নিয়ে আমাদের ২০ থেকে কিছু বেশী কর্মীকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটিয়েছে। আমাদের দলের স্থানীয় নেতা শেখ ইরাজুল ইসলামের পিস তুত ভাইয়ের বাড়ি। খবর নিয়ে দেখেছি, সকাল গ্রামে পুলিশ ঢুকছে দেখে, বাসিন্দারা ছোটাছুটি শুরু করে। রান্না করার সময়ে খড়ের চালায় আগুন ধরেছে।’’

এ দিকে ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প থাকলেও, উত্তেজনা থাকায় এবং বাড়তি গণ্ডগোলের আশঙ্কায় কড়া নজরদারি বাড়িয়েছে জেলা পুলিশ। রবিবার গভীর রাত থেকে সোমবার ভোর রাত পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে বোমাবাজির জেরে, এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর নেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE