—প্রতীকী চিত্র।
আশঙ্কাই সত্যি হল!
ডেঙ্গির গতিপ্রকৃতি দেখে মাস কয়েক আগেই চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, চলতি বছরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ পেরিয়ে যাবে। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ পরিসংখ্যান বলছে, ডিসেম্বরের চতুর্থ দিনেই লক্ষের ঘরে ঢুকে গিয়েছে মশাবাহিত ওই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও উদ্বেগ কিন্তু কাটেনি। বরং দক্ষিণ ভারতে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বঙ্গে কয়েক পশলা বৃষ্টির পূর্বাভাসের জেরে পুনরায় ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
রাজ্যে চলতি বছরে, অর্থাৎ গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মোট কত জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, সরকারি ভাবে তার কোনও পরিসংখ্যান কখনও দেয়নি স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কর্তারা অনেকেই বলছেন, এক বছরে এক লক্ষ মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, এমনটা গত ১২ বছরে কখনও হয়নি। তার আগেও কখনও হয়েছে কি না, সেটাও অবশ্য মনে করতে পারছেন না জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। তবে স্বাস্থ্য কর্তারা এটাও দাবি করছেন, এ বার পরীক্ষা বেশি হওয়ার কারণেই আক্রান্তের সংখ্যা এতটা প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু তার পরেও রাজ্যে মোট আক্রান্ত বা ডেঙ্গিতে মৃত্যুর তথ্য কেন সরকার প্রকাশ্যে আনছে না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, এক লক্ষ আক্রান্তের মধ্যে প্রায় ৯০ হাজার জনই দক্ষিণবঙ্গের ১৬টি জেলার বাসিন্দা। গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের তালিকার প্রথমে নাম রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার। গত জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত ২০ হাজার ৮১ জন। এর পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা (১৩৯৪১ জন), তৃতীয় স্থানে মুর্শিদাবাদ (১১৭২১ জন), চতুর্থ হুগলি (৭৮৩৪ জন), পঞ্চম নদিয়া (৬৪৩৪ জন), ষষ্ঠ হাওড়া (৫৮১১ জন) এবং সপ্তম স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৩৯৫০ জন)। মঙ্গলবার সকালে বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েক জায়গায় অল্প বৃষ্টি হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এখনও যদি মানুষ সচেতন না হন, তা হলে বিক্ষিপ্ত ভাবে আবারও জল জমবে বিভিন্ন জায়গায়। আর এখনও যেহেতু ডেঙ্গির প্রকোপ রয়ে গিয়েছে, তাই মশার বংশবিস্তার হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দোলুই বলেন, ‘‘হালকা ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। তার মধ্যেই হঠাৎ করে মেঘলা আকাশ, কয়েক পয়লা বৃষ্টির আবহাওয়ায় ডেঙ্গি তো বটেই, অন্যান্য ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়াজনিত অসুখের প্রকোপও বাড়বে। তাই আগামী শীতের মরসুমে খুবই সচেতন থাকতে হবে। কারণ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে রোগীদের আসা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে, ২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত প্রতি বছরই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছয় থেকে আট হাজারের মধ্যে ছিল। ২০১৬-তে ২২ হাজার ৮৬৫, ২০১৭-তে ৩৭ হাজার ৭৪৬ এবং ২০১৮-তে প্রায় ২০ হাজার, ২০১৯-এ প্রায় ৫০ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর পরের দু’টি বছরে করোনার কারণে তেমন ভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা যায়নি। ২০২০-য় পাঁচ হাজার ১৬৬ এবং ২০২১-এ ৮ হাজার ২৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে গত বছর, অর্থাৎ ২০২২-এ রাজ্যে ৬৭ হাজার ২৭১ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেখান থেকে সংখ্যাটি এক লাফে যে লক্ষে পৌঁছে যাবে, সেটা ভাবা যায়নি বলেই মত চিকিৎসকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy