কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। —ফাইল চিত্র।
নির্ধারিত সময়ের চেয়ে মাত্র দু’মিনিট দেরি হয়েছিল। তাতেই গত বছর মনোনয়ন বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল রাজ্যসভায় সিপিএম প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্যের। এ বার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকার শর্ত না মানা সত্ত্বেও কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির মনোনয়ন কেন বাতিল করা হল না, প্রশ্ন তুলল সিপিএম।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন সিঙ্ঘভি। তাঁকে সমর্থন করছে তৃণমূল। সিপিএমের অভিযোগ, শাসক দলের ‘চাপ’ থাকায় নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার অর্থাৎ বিধানসভার সচিব বেনিয়ম দেখেও চুপ করে থেকেছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় রাজ্যসভায় হার প্রায় নিশ্চিত জেনেও রবীন দেবকে রাজনৈতিক কারণে প্রার্থী করেছে সিপিএম। প্রার্থী দেওয়া এবং তার পরে সিঙ্ঘভির মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্নের জেরে বিধানসভায় কংগ্রেস-বাম সম্পর্কেও এই মুহূর্তে ‘তিক্ততা’র ছায়া।
সিপিএমের অভিযোগ, আইনজীবী সিঙ্ঘভির মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় আইনি ফাঁক বিস্তর। কমিশনের নির্দেশিকা বলছে, ওই ধরনের বিচ্যুতি থাকলে মনোনয়নপত্র গৃহীত হবে না। সুপ্রিম কোর্টের এই মর্মে নির্দেশও আছে। বামেরা রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছিল ১৫ মার্চ। যাওয়া হয়েছিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছেও। কিন্তু কমিশন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাজ্যসভা ভোটের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে সিপিএম ওই অভিযোগ প্রকাশ্যে এনেছে। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘আমরা এই রকম দাবি করছি না যে, সিঙ্ঘভির মনোনয়ন এখন বাতিল করে রবীন দেবকে নির্বাচিত ঘোষণা করতে হবে! কিন্তু কমিশনের কাছে আমাদের প্রশ্ন, এক যাত্রায় পৃথক ফল কেন হবে?’’
সিঙ্ঘভির পুরনো এবং বর্তমান হলফনামা দেখিয়ে রবীনবাবুর অভিযোগ, ২০০৬ সালে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী হওয়ার সময়ে কংগ্রেস নেতা বয়স দেখিয়েছিলেন ৪৩। সেই হিসেবে এখন তাঁর বয়স ৫৫। কিন্তু এ বারের হলফনামায় ৫৯ লেখা আছে। তেমনই প্রার্থীর ঘোষণাপত্রের অংশে টাইপ করে বা হাতে লিখে তথ্য জানাতে হয়। দু’টো একসঙ্গে করা যায় না। অথচ সিঙ্ঘভি টাইপ করা তথ্যের উপরে কলম চালিয়েছেন, প্রতি পাতায় নোটারির সইও নেই। রবীনবাবু বুধবার বলেন, ‘‘আমার হলফনামায় কিছু অস্পষ্টতা আছে বলে রিটার্নিং অফিসার জানানোয় সে দিনই অতিরিক্ত হলফনামা দিয়েছি। অথচ অন্য এক প্রার্থীর হলফনামায় এত ত্রুটি দেখেও ছেড়ে দেওয়া হল?’’
রিটার্নিং অফিসার অবশ্য মুখ খোলেননি। চণ্ডীগড় থেকে সিঙ্ঘভি যদিও বলেছেন, ‘‘বয়স কমাতে পারলে ভালই হতো! কিন্তু আমার জন্মতারিখ সর্বত্র একই।’’ তবে অভিযোগের কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা তাঁর বিবৃতিতে নেই। তিনি আজ, বৃহস্পতিবার আসছেন কলকাতায়। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মন্তব্য, ‘‘যে সিপিএমের সঙ্গে জোটের জন্য এত লড়লাম, তারাই আমাদের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy