বাঁকুড়া থানায় শিবানী নন্দী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
ঝাঁটার ঘায়ে ছড়েছে গলা, বুক। তার উপরে ছেটানো হয়েছিল লঙ্কার গুঁড়ো। ৭৪ বছরের বৃদ্ধা শিবানী নন্দীর চিৎকারে পড়শিরা ছুটে যান। তাঁদের দেখে স্ত্রী-কে নিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা এঁটে দেন দিদিমা শিবানীদেবীর উপরে এমন অত্যাচার চালানোয় অভিযুক্ত নাতি সন্টু বিশ্বাস। পরে সন্টুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর স্ত্রী গা-ঢাকা দেন। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া শহরের গোপীনাথপুরের নামোপাড়ার ঘটনা।
বছর পঞ্চাশ আগে স্বামী মারা যান শিবানীদেবীর। পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালিয়েছেন তিনি। মেয়ে রিনার বিয়ে দেন। বাড়িতেই রাখেন মেয়ে-জামাইকে। রিনাদেবীর ছেলে কুরিয়ার সংস্থার কর্মী সন্টুও দিদিমার বাড়িতে থাকেন। এ দিন বাঁকুড়া সদর থানায় সন্টু ও নাতবউ পিউয়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করে শিবানীদেবী বলেন, ‘‘সন্টুকে কোলেপিঠে বড় করেছি। লক্ষ্মীপুজো করার জন্য সকাল ৯টায় নাতবৌকে ঘুম থেকে ডাকি। তাতে তার রাগ হয়।’’ বৃদ্ধার অভিযোগ, ‘‘বৌয়ের কথায় সন্টু আমাকে ঝাঁটা পেটা করে কাটা জায়গায় লঙ্কার গুঁড়ো ছেটায়।’’
রিনাদেবীর দাবি, মাস সাতেক আগে বছর ছাব্বিশের সন্টুর বিয়ের পর থেকে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বৌমা আমাদের বাড়িছাড়া করতে উঠেপড়ে লেগেছিল।
কিছু বললে হুমকি দিত, বধূ নির্যাতনের মামলা করে সবাইকে জেলে ঢোকাবে।’’ মাসখানেক আগে স্বামীকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে চলে যান রিনাদেবী। তবে শিবানীদেবী স্বামীর ভিটে ছাড়েননি। খাবার খেতেন রিনাদেবীর কাছে। রিনাদেবীর বাড়িতে দিন কয়েক আগে সমস্যা হওয়ায় সন্টুর কাছে খাচ্ছিলেন বৃদ্ধা। পড়শিদের একাংশের দাবি, সন্টু ও তাঁর স্ত্রী প্রায়ই শিবানীদেবীর উপরে অত্যাচার করতেন। এ দিন তা ‘মাত্রা’ ছাড়ায়। ফলে, এলাকাবাসী মারমুখী হয়ে ওঠেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলর দেবাশিস লাহা খবর দেন পুলিশে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, ‘‘নাতিকে ধরা হয়েছে। খোঁজ চলছে তার স্ত্রী-র।’’
রিনাদেবী বলেন, ‘‘সন্টু যা করল, ওকে ছেলে বলে পরিচয় দিতে লজ্জা হচ্ছে।’’ শিবানীদেবীর আক্ষেপ, ‘‘নাতি বদলে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy