Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
AITC

KMC Election 2021: জোড়াফুলের রাজেশ আর পদ্মের রাজীব, কলকাতায় দুই ফুলের প্রার্থী হয়ে লড়াইয়ে দুই ভাই

রাজেশ ও রাজীবের মতোই, ২০১৪ সালে দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথাগত এবং তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সৌগত।

ভাই রাজীব বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে। দাদা রাজেশ তৃণমূলের প্রার্থী ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে।

ভাই রাজীব বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে। দাদা রাজেশ তৃণমূলের প্রার্থী ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র।

অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:৩০
Share: Save:

জোড়াসাঁকোর সিংহ পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাস অনেক দিনের। পিতা প্রয়াত অনয়গোপাল সিংহের উত্তরাধিকার সূত্রেই তাঁর দুই পুত্র রাজেশ ও রাজীব এসেছেন রাজনীতিতে। কিন্তু এ বার কলকাতা পুরভোটে দুই ভাই প্রার্থী হয়েছেন দুই শিবির থেকে। দাদা রাজেশ সিংহ প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল থেকে, আর ভাই রাজীব সিংহ প্রার্থী হয়েছেন বিজেপি-র। তবে পরস্পরের বিরুদ্ধে দাঁড়াননি তাঁরা। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর স্মিতা বক্সীকে সরিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে রাজেশকে। আর ভাই পদ্ম প্রতীকে রাজীব প্রার্থী হয়েছেন ৪১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। রাজেশ ও রাজীব পৃথক শিবির থেকে প্রার্থী হলেও এখন তাঁরা বাস করেন একসঙ্গেই। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তাঁদের উভয়েরই ঠিকানা ১৩ পাঁচু ধোবানি গলি, কলকাতা– ৭০০০০৭। দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্কও যথেষ্ট ভাল। শুধু এক বাড়িতে থাকাই নয়, পারিবারিক ও সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে রাজেশ ও রাজীবকে একত্রেই দেখা যায় বলে জানাচ্ছেন তাঁদের ঘনিষ্ঠরা। তাঁদের পিতা অনয়গোপাল পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পরিচিত নাম ছিলেন। ১৯৯৬ সালে জগদ্দল বিধানসভা থেকে বিধায়কও হয়েছিলেন। দুই ছেলেও বাবার হাত ধরে কংগ্রেসে আসেন। কিন্তু বর্তমানে রাজেশ তৃণমূলে, রাজীব বিজেপি-তে।

দুই ভাইয়ের পৃথক শিবির থেকে প্রার্থী হওয়া নিয়ে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তাপস রায়ের বক্তব্য, ‘‘একই পরিবারে থেকে পৃথক রাজনীতি করা যাবে না, এমনটা কোথাও বলা নেই। মতাদর্শ পৃথক হতেই পারে।’’ তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর আবার বক্তব্য, ‘‘তথাগত রায় ও সৌগত রায় দুই ভাই। কিন্তু তাঁরাও তো পৃথক রাজনীতি করেন। সেক্ষেত্রে তো সংবাদমাধ্যম কোনও প্রশ্ন তোলে না?’’ প্রসঙ্গত, রাজেশ ও রাজীবের মতোই, ২০১৪ সালে দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথাগত এবং তৃণমূলের প্রতীকে দমদম থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সৌগত। বিজেপি-র তথাগত পরাজিত হলেও, জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের সৌগত।

বাড়ির পুজোয় একসঙ্গে অংশ নিচ্ছেন রাজীব-রাজেশ।

বাড়ির পুজোয় একসঙ্গে অংশ নিচ্ছেন রাজীব-রাজেশ।

তাঁর এবং ভাইয়ের দুই পৃথক শিবির থেকে ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে রাজেশ বলেন, ‘‘আমার বাবা ছিলেন কংগ্রেস নেতা। আর জেঠু কৃষ্ণগোপাল সিংহ ছিলেন জনতা পার্টির নেতা। তা সত্ত্বও বাবা ও জেঠুর মধ্যে সম্পর্ক কখনও নষ্ট হয়নি। আমার আর ভাইয়ের ক্ষেত্রেও তাই, মতাদর্শ আলাদা হলেও, সম্পর্কে তার প্রভাব পড়বে না।’’ ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী রাজীবকে প্রতিক্রিয়া মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপি-র সভাপতি শিবাজী সিংহরায় বলেন, ‘‘রাজীব প্রায় তিন বছর ধরে বিজেপি-র সঙ্গে যুক্ত। খুব নিষ্ঠার সঙ্গেই বিজেপি করেছে। বিধানসভা ভোটের পরও দল ছাড়েনি। তাই দলের ওর প্রতি দলের আস্থা রয়েছে। সেই আস্থা থেকেই আমরা ওকে প্রার্থী করেছি। আগামী দিনেও রাজীব আমাদের সঙ্গেই থাকবে। আর রাজীবের দাদার তৃণমূল প্রার্থী হওয়া নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। আর এক পরিবারে জন্মে ভিন্ন ঘরানার রাজনীতি করার ইতিহাস ভারতের রাজনীতিতে ভূরি ভূরি রয়েছে।’’

উল্লেখ্য, এ বারের পুরভোটে তৃণমূলের প্রতীকেই ১১৬, ১১৭ ও ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন কন্যা কৃষ্ণা সিংহ, পুত্র অমিত সিংহ ও পিতা তারক সিংহ। আবার ৯০ ও ৯১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের আইনজীবী নেতা বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী চৈতালী চট্টোপাধ্যায়। তবে একই পরিবার থেকে দুই ভাই দুই শিবির থেকে প্রার্থী হয়ে কলকাতার পুরভোটের ইতিহাসে এক নজির তৈরি করলেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy