গার্ডেনরিচে ত্রাণ বিলি নিয়ে সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা বন্দর এলাকায় মাফিয়ারাজ চালানো, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং বন্দর ব্যবহারকারীদের থেকে গুন্ডা-কর আদায়ের অভিযোগে মামলা শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে সাত জন শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে ইডি জেনেছে। কয়েক জন গার্ডেনরিচ-খিদিরপুর এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলরও। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠালেও তাঁরা সাড়া দেননি বলে অভিযোগ। ইডির দাবি, অভিযুক্তরা সকলেই গা ঢাকা দিয়েছেন। পুরো ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
ইডি সূত্রের খবর, গত ৩০ মার্চ গার্ডেনরিচ এলাকায় করোনার রেশন বিলি নিয়ে বোমা-বন্দুকের লড়াই হয়েছিল। শাসক দলের কোন গোষ্ঠীর হাত দিয়ে রেশন বিলি হবে, তা নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। সেখান থেকে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ এবং বোমাবাজি, গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। রেশন বিলিতে তছরুপ নিয়ে নজর রাখছিলেন ইডি’র তদন্তকারীরা। গার্ডেনরিচের ঘটনার খোঁজ নিতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, রেশন বিলি নিয়ে হওয়া সংঘর্ষের নেপথ্যে অনেক বড় চক্র কাজ করছে। ইডি’র কাছে বন্দর ব্যবহারকারীদের থেকে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগে যাঁদের নাম পাওয়া গিয়েছিল, তাঁদেরও কেউ কেউ সে দিনের সংঘর্ষে জড়িত। ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত জামতারা গ্যাংয়ের একটি ঘাঁটিও তৈরি হয়েছে গার্ডেনরিচে। সেই দলটিকে ‘সুরক্ষা’ দেওয়ার কাজও করতেন অভিযুক্তরা। এর পর এপ্রিলের মাঝামাঝি মামলাটি গ্রহণ করে ইডি।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘এমন কিছু আমার জানা নেই। তাই মন্তব্য করব না। তবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি সারা ক্ষণই তো আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে।’’
করোনার রেশন বিলিতে মারামারির ঘটনায় ইডি কী ভাবে মামলা করতে পারে, তা নিয়েও চর্চা চলছে। কারণ, ইডি পিএমএলএ আইনে মানি লন্ডারিংয়ের (বেআইনি ভাবে অর্থ পাচার বা তছরুপ) অভিযোগ পেলে তবেই তদন্ত করতে পারে। ইডি’র কর্তারা জানাচ্ছেন, ৩০ মার্চেৱ সংঘর্ষে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল। বোমাবাজি হয়েছিল। জানা দরকার, ওই আগ্নেয়াস্ত্র কেনার টাকার উৎস কী। সেগুলির লাইসেন্স রয়েছে কি না। আগ্নেয়াস্ত্র কেনার অর্থ ‘বৈধ’ কিনা। সেই কারণেই মামলা দায়ের হয়েছে। কারণ, বন্দর ব্যবহারকারীদের থেকে যে সব অভিযোগ এসেছে, তাতে একই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বন্দরে নানা অবৈধ কারবার চালানোর অভিযোগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy