—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রশ্ন: অগস্ট মাসের পর থেকে আওয়ামী লীগকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না। নিকট ভবিষ্যতে আপনাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি কী?
উত্তর: ৫ অগস্টের পরের বাস্তবতায় বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার, নাগরিক অধিকার নেই। যারা ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাচ্ছে এদের ভিত্তি হচ্ছে জবরদস্তি, ভীতি, ত্রাস, সন্ত্রাস এবং উগ্রবাদ। জনতার রায় ছাড়াই, অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক, অন্যায্য, স্বঘোষিত সরকার ইতিমধ্যে খুনিদের দায়মুক্তি দিয়ে আইন করেছে, স্বাধীনতাবিরোধী, মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত মৌলবাদী সংগঠনকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ অব্যহত রেখেছেন, জীবন বাজি রেখেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে
যাচ্ছেন। কুক্ষিগত গণতন্ত্র, অবরুদ্ধ স্বাধীনতা, বিপন্ন মৌলিক
অধিকার এবং রাষ্ট্র পরিকল্পিত নির্বাসিত মুক্তিযুদ্ধ জনগণের ক্ষোভকে দ্বিগুণই করছে কেবল।
প্রশ্ন: মূল স্রোতের রাজনীতিতে আপনাদের ফিরতে দেওয়া হবে না, স্পষ্ট জানিয়ে রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কী ভাবছেন?
উত্তর: মূল স্রোতের রাজনীতি কোনটি তা যখন অবৈধ সরকার নির্ধারণ করে দেয়, তখনই স্পষ্ট হয় ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্তই তাদের নয়া বন্দোবস্ত। জনগণের বৃহত্তর অংশের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলকে যখন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই অসাংবিধানিক সরকার আসলে গণতন্ত্রের ভয়ে ভীত। তবে আমি আশাহত নই। উদার মূল্যবোধ, ধর্মনিরপেক্ষ সমাজচেতনা, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বাংলাদেশের জনগণই এদের দর্পচূর্ণ করবে।
প্রশ্ন: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে রয়েছেন। আপনাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে? কী নির্দেশ তিনি দিচ্ছেন?
উত্তর: বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার সম্পর্ক দৃঢ় ও গভীর। বাংলাদেশের প্রান্তে প্রান্তে কান পাতলে শোনা যায় জনগণ তাঁর উপরেই আস্থা রাখে। তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও তাঁর সর্বক্ষণ যোগাযোগ রয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা কী?
উত্তর: ভারত গণতান্ত্রিক বিশ্বের অন্যতম অংশীদার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনুকরণীয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ এবং কানেক্টিভিটি দু’দেশের জনগণের জন্যই আশীর্বাদ। শেখ হাসিনা সরকার কূটনীতিতে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছিলেন এবং ভারতের সঙ্গে মৈত্রীর মাধ্যমেই জনগণের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছিলেন।
প্রশ্ন: জেলায় জেলায় আপনাদের কর্মী-সমর্থেকরা ছত্রভঙ্গ। কী ভাবে নিজেদের গোছানোর পরিকল্পনা করছেন?
উত্তর: ছাত্র লীগের অনেক নেতা-কর্মীর নাম যোগ হয়েছে মৃত্যুর মিছিলে, হাজারো নেতা-কর্মীকে রাখা হয়েছে বিনা বিচারে কারাগারে, কয়েক লাখ নেতা-কর্মী শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত, সার্টিফিকেট ও ডিগ্রি বাতিল হচ্ছে, ‘জয় বাংলা’ বলার অপরাধে নির্যাতিত হচ্ছে। এর মধ্যেও নেতা-কর্মীরা মিছিল করছেন, সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন এবং বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জুলুম যত জোরালো হচ্ছে, ঐক্যের ভীত হচ্ছে মজবুত। বিজয়ই আমাদের একমাত্র বিকল্প।
প্রশ্ন: সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি এখন কেমন? জামাতের রাজনীতি কোন পথে যাচ্ছে বলে মনে করেন?
উত্তর: রাষ্ট্রীয় ভাবে সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। সনাতন ও অপরাপর ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, উৎসবের স্বাধীনতা বিপন্ন। সংখ্যালঘুদের নিয়োগ
বাতিল করা হচ্ছে। সার্বিক ভাবে এক ধরনের বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে সাম্প্রদায়িক আক্রমণের প্রতি সরকারের সমর্থন রয়েছে। এ সরকারের কর্মকাণ্ডে এটি প্রমাণিত হয় যে নাগরিকতার ধারণা এদের কাছে খণ্ডিত। ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য দখল, হেনস্থা, মর্যাদাহানি ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্র এ সব অপরাধের পরিকল্পক ও অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
প্রশ্ন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ভূমিকা কী ভাবে দেখছেন?
উত্তর: এই মঞ্চটি ফ্যাসিস্ট ইউনূসের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ভিন্নমত দমন করা, আক্রমণ পরিচালনা করা, তদ্বিরের বাণিজ্য করা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত করাই এদের মূখ্য ভূমিকা। একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের আদলে ‘শান্তি কমিটি’র মত এরা ‘নাগরিক কমিটি’ তৈরি করেছে। অঘোষিত এই ‘কিংস পার্টি’ সরকার এবং রাজনৈতিক দলের সীমারেখা মুখে দিয়েছে এবং গণতন্ত্রকে তাদের ‘স্বার্থের অধীন’ বিষয়ে পরিণত করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy