গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা ছিলই। সেটাই এ বার সত্যি হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব কেনার জন্য একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের একাংশের দাবি, সেই টাকা হাতে পাওয়ার পরেই বহু স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কমছে। প্রসঙ্গত, শুধু ট্যাবের টাকা পাওয়ার জন্যই যে অনেকে স্কুলে আসছে এবং টাকা পেলেই তারা স্কুলে আসা বন্ধ করবে, এই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন শিক্ষকদের অনেকে।
ট্যাবের টাকা পাওয়ার পরেই কয়েক জন একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া স্কুলে আসছে না বলে জানান দ্য খিদিরপুর অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ মহম্মদ সালেহিন। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক জন বলেছে, তারা কাজ করছে। তাই ট্যাবের টাকা পেয়েই স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে।’’ সালেহিন এ-ও জানান যে তিনি পড়ুয়াদের বলেছেন, ৭০ শতাংশ উপস্থিতি না হলে পরের সিমেস্টারে বসতে দেওয়া হবে না। কিন্তু তারা শুনছে না। ওই স্কুলেরই এক ছাত্র সুরজিত হরি স্কুল ছাড়ার কথা স্বীকার করে বলেছে, ‘‘একটা রেস্তরাঁয় কাজ করছি। ট্যাবের টাকায় মোবাইল কিনেছি।’’ দমদম সুভাষনগর হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রথম সিমেস্টারের পরে দ্বিতীয় সিমেস্টারের ক্লাসে পড়ুয়ার সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে কমেছে। ট্যাবের টাকা পাওয়ার পরে অনেকেই আসছে না।’’ বঙ্কিম ঘোষ মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অনিতা সরকার বলেন, ‘‘একাদশে উপস্থিতির হার কমেছে স্কুলে।’’
প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘একদিকে শিক্ষা দফতর বলছে যে স্কুলে মোবাইল আনা নিষিদ্ধ। আবার শিক্ষা দফতর থেকেই ট্যাবের জন্য টাকা দিচ্ছে! অফলাইনে ক্লাস চলার সময়ে ট্যাবের টাকা দেওয়া জরুরি কি না, তা-ও শিক্ষা দফতরকে ভাবতে হবে।’’
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের ‘ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস’ (ইউ-ডায়েস)-এর ২০২৩-২৪ সালের রিপোর্ট বলছে, এ রাজ্যে মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুটের হার ১৭.৮৫ শতাংশ। যা সর্বভারতীয় হারের (১৪.১ শতাংশ) তুলনায় বেশি। ওই সমীক্ষায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলছুটের পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি। কিছু শিক্ষকের দাবি, ওই পরিসংখ্যান সামনে এলে এ রাজ্যের ছবি আরও করুণ হত। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘শিক্ষা মন্ত্রকের ওই রিপোর্ট কতটা নির্ভুল, তা হলফ করে বলতে পারি না। তবে বেশ কিছু স্কুলে ছাত্রছাত্রী কম। স্কুলে পড়ুয়া কম, এমন কিছু স্কুলকে একসঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy