মেজর ডালিম।
চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে ঢাকা থেকে লন্ডন পৌঁছেই তাঁর একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা। আবার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম করার অভিযোগে সোমবারই একটি মামলায় আওয়ামী লীগের নেত্রী ও সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। হাসিনা-সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি সময়সীমা নির্দিষ্ট করেছে আদালত। তবে, বাংলাদেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে এখন শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম হত্যাকারী মেজর শরিফুল হক ডালিম, ৫০ বছর পরে যিনি জামায়াত সমর্থক এক সংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিয়ে তাঁর কৃতকর্মের জন্য সাফাই দেওয়ার পাশাপাশি হাসিনা-বিরোধী অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনার আমলে দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে যে কারাদণ্ড দেওয়া হয়, সেনাপ্রধানের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ৬ অগস্ট তা খারিজ করেন। গুরুতর অসুস্থ খালেদাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন বলে চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিলেও নানা কারণে এত দিন তা সম্ভব হচ্ছিল না। সম্প্রতি খালেদা কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরে কাল রাতে তাঁকে লন্ডনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাতারের আমিরের ব্যক্তিগত এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সটি সোমবারই ঢাকায় পৌঁছেছে। মঙ্গলবার রাতে বেগম জিয়াকে নিয়ে বিমানটি লন্ডন রওনা হবে। কবে ফিরবেন খালেদা, এই প্রশ্নের
জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “একমাত্র চিকিৎসকেরাই তা বলতে পারেন।”
রবিবার রাতে প্রবাসী এক সাংবাদিকের নিজস্ব সমাজমাধ্যমে ৫০ বছর পরে লাইভে উপস্থিত হন শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম হত্যাকারী মেজর ডালিম। ২ ঘণ্টা ৩ মিনিটের এই সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানটি লাইভে দেখেন প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ভিডিয়োটি দেখেছেন অন্তত ৭৬ লক্ষ জন। সাক্ষাৎকারে হাসিনা-বিরোধী অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানান মেজর (পরবর্তী কালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল) শরিফুল হক ডালিম। তবে ঠিক কোন দেশ থেকে তিনি এই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তা গোপন রাখা হয়। ডালিম জানান, ‘হত্যাকারী’ কথায় তাঁর আপত্তি রয়েছে। তিনি বলেন, “মুজিব মারা যাননি। সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন।” তাঁর কথায়, “স্বৈরাচারী শেখ মুজিব তাঁর জুলুমের মাত্রা এতটাই তীব্র করেছিলেন, মানুষ তাঁর হাত থেকে মুক্তি চাইছিল।” ‘বীর বিক্রম’ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মেজর ডালিম দাবি করেন, শেখ মুজিবের আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের চট্টগ্রাম সেক্টরের কমান্ডার হিসাবে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। আর সেই ডাক শুনে উদ্বেল হয়ে তিনি ও আরও ৫ জন সেনা অফিসার পাকিস্তানি বাহিনী ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ডালিমের দাবি, দিল্লিতে তাঁদের অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তবে অচিরেই তিনি বুঝতে পারেন বাংলাদেশকে ‘করদ রাজ্যে পরিণত করছে ভারত’। ডালিমের দাবি, ‘আদ্যন্ত সৎ’ জিয়াউর রহমান মুজিবের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। তবে পরে উনি সরে যান। ১৯৭৫-এর ১৫ অগস্ট শেখ মুজিবকে হত্যার পরে ডালিমই বাংলাদেশ বেতারে তা ঘোষণা করেন। তবে
তাঁর সাক্ষাৎকারটির পরে সমাজমাধ্যমে
মুজিব হত্যার বিরুদ্ধেই জনমত প্রবল হয়েছে। অনেকেই ডালিমকে ‘কাপুরুষ’ বলে গালমন্দ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy