Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
Habibpur

বেহাল রাস্তা, খাটিয়ায় রোগী বইলেন পরিজন

শনিবার বৃষ্টির পরে তা পুরো বেহাল। শনিবার সকাল থেকে পেটে প্রচণ্ড ব্যথায় কাতর মেস্তোরপাড়ার বছর ষাটের কানু হেমব্রমকে সেই রাস্তা দিয়েই খাটিয়ায় চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় লইবাড়িতে।

হবিবপুর ব্লকের মেস্তরপাড়ায় বেহাল রাস্তার জেরে খাটিয়ায় রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিও। ছবি: নিজস্ব চিত্র

হবিবপুর ব্লকের মেস্তরপাড়ায় বেহাল রাস্তার জেরে খাটিয়ায় রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিও। ছবি: নিজস্ব চিত্র

জয়ন্ত সেন
হবিবপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০৭
Share: Save:

ফের খাটিয়ায় রোগীকে নিয়ে যাওয়া হল চিকিৎসা করাতে। আগের বার ছিল বামনগোলার মালডাঙায়। এ বারে মালদহেরই হবিবপুরের মেস্তোরপাড়া গ্রামে। কারণ একই, বেহাল রাস্তা। রোগীকে নিয়ে যেতে টোটো বা গাড়ি মেলেনি। তবে বামনগোলার রোগীকে বাঁচানো যায়নি। হবিবপুরের রোগী বেঁচে আছেন। পাশের লইবাড়ি গ্রামের এক গ্রামীণ চিকিৎসককে দেখিয়ে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় খাটিয়ায় করেই। খাটিয়ায় করে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান। তবে মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।”

গত বছর নভেম্বরে বেহাল রাস্তার জন্য বামনগোলার মালডাঙা গ্রামের অসুস্থ মামনি রায়কে (২৫) খাটিয়ায় চাপিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয় স্বামী কার্তিক ও পরিজনকে। হাসপাতালে পৌঁছলে ডাক্তার জানান, মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ, মালডাঙার রাস্তা সংস্কার এখনও শেষ হয়নি।

মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়ক থেকে হবিবপুর পঞ্চায়েতের মেস্তোরপাড়া যাওয়ার দু’টি রাস্তা। একটি তাজপুর থেকে কালপেচি হয়ে ও অন্যটি বুলবুলচণ্ডী থেকে ডুবাপাড়া, লইবাড়ি হয়ে। মেস্তোরপাড়া থেকে লইবাড়ির মূল পাকা রাস্তায় উঠতে গেলে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা এখনও কাঁচা। খানাখন্দও রয়েছে। শনিবার বৃষ্টির পরে তা পুরো বেহাল। শনিবার সকাল থেকে পেটে প্রচণ্ড ব্যথায় কাতর মেস্তোরপাড়ার বছর ষাটের কানু হেমব্রমকে সেই রাস্তা দিয়েই খাটিয়ায় চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় লইবাড়িতে। কানুর ছেলে অর্জুন বলেন, “কাছে কোনও হাসপাতাল নেই। ব্লক হাসপাতাল ১০ কিলোমিটার দূরে বুলবুলচণ্ডীতে। একে বৃষ্টি, তার উপরে বেহাল রাস্তার জন্য টোটো ডেকে পাইনি। পরে গ্রামের দুই বাসিন্দা তালা সরেন ও কবিরাজ মুর্মুকে রাজি করিয়ে খাটিয়ায় করে বাবাকে নিয়ে লইবাড়িতে হাতুড়ের কাছে যাই।”

রবিবার দুপুরে বাড়ির বারান্দায় ওই খাটিয়ায় শুয়ে কানু বলেন, “এখন কিছুটা সুস্থ আছি।” গ্রামবাসী হপল হেমব্রম, কবিরাজ কিস্কুরা বলেন, “ভোট এলে রাস্তা পাকা করার আশ্বাস মেলে। পঞ্চায়েত প্রধানকে একাধিক বার জানিয়েও রাস্তা পাকা হয়নি।” পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের শ্রীনাথ হেমব্রম বলেন, “ওই রাস্তা খারাপ। তবে এমন পরিস্থিতি নেই যে খাটিয়ায় করে রোগীকে নিতে হবে। ওই ঘটনা নিয়ে নাটক করা হয়েছে।” হবিবপুরের বিডিও মনোজ কাঞ্জিলাল বলেন, “খুব শীঘ্রই রাস্তা পাকা হবে।”

মালডাঙা গ্রামের কার্তিক রায় বলেন, “বেহাল রাস্তার জন্য সময়মতো হাসপাতালে নিতে না পেরে স্ত্রীকে হারিয়েছি। ফের বেহাল রাস্তার জন্য রোগীকে খাটিয়ায় নিয়ে যাওয়ার ঘটনা মানা যায় না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Habibpur Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy