শব্দব্রহ্ম: বিজেপির সভার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার বিকেলে সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
সিউড়িতে সভা করতে আসছেন না বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। দলীয় সূত্রে খবর, তাঁর বদলে আসছেন অন্য কোনও নেতা। সোমবার সকালে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই দৃশ্যতই হতাশ জেলা বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, সভার জন্য মাঠ খুঁড়তে হয়েছে। দমকল, থেকে পূর্ত দফতরের অনুমতি জোগাড়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। সমস্ত প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। কেন্দ্রীয়, রাজ্য ও জেলার নেতারা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি সভার আয়োজনে কোনও ফাঁক না রাখতে তৎপর ছিলেন। শুধু বাকি ছিল হেলিপ্যাডের অনুমতি পাওয়া। কিন্তু যাঁর জন্য এত আয়োজন, তিনি না আসায় ‘মনখারাপ’ জেলা বিজেপি নেতৃত্বের।
বিজেপি সূত্রে খবর, বুধবার সিউড়িতে সভা হচ্ছেই। সভার সময় ও স্থানও বদল হচ্ছে না। অমিতের বদলে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কিন্তু সাধারণ কর্মী থেকে নেতা— সকলেই আড়ালে মানছেন, স্মৃতি ইরানি কখনই অমিত শাহের পরিবর্ত হতে পারেন না। দলের এক জেলা কমিটির নেতার কথায়, ‘‘স্মৃতি ইরানি আসুন, একান্তই যদি অমিতজি না আসতে পারেন তা হলে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অন্তত আসুন। কিন্তু তিনি আসছেন এমন খবর নেই।’’
যদিও মঙ্গলবার, সিউড়িতে দলীয় কার্যালয়ে দফায় দফায় বৈঠক সেরে জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘কে আসছেন তা কোনও বিষয় নয়। সভা হবেই। এবং সফলও হবে।’’
দলীয় সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত বিজেপির ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’য় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। তার পরের দিন বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচি ‘গণতন্ত্র বাঁচাও সভা’ করার কথা ঘোষণা করে বিজেপি। জানানো হয়, রাজ্যে পাঁচটি সভা করবেন অমিত শাহ। সেই তালিকায় ছিল সিউড়িও। প্রথমে ২১ জানুয়ারি সভা করার কথা থাকলেও, অমিত শাহের অসুস্থতার কারণে সভার তারিখ দু’দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। রথযাত্রা তারাপীঠ থেকে বের হওয়ার কথা ছিল। সেখানেও যোগ দেওয়ার কথা ছিল অমিতের। তা বাতিল করা হলেও, অমিত সিউড়িতে সভা করতে আসছেন— এই খবর চাঙ্গা করেছিল দলের নেতা কর্মীদের। দলের নেতাদের একাংশ বলছেন, জেলার বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল, তা দূরে সরিয়ে কী ভাবে সভা সফল করা যায়, তা নিয়ে তৎপর হয়েছিলেন সকলে। মণ্ডলে মণ্ডলে বার্তা গিয়েছে সভাস্থল ভরানোর জন্যে। দলের কর্মী-সমর্থকদের আসতে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য ঝাড়খণ্ড থেকেও বাস ও ছোটগাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
কেন অমিত বীরভূমে এলেন না, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারলেও কয়েক জনের ধারণা, তাঁর অসুস্থতার জন্যেই সভায় আসছেন না। জেলা বিজেপির একটা অন্য অংশ বলছেন— ‘‘অমিত শাহ যে সিউড়িতে আসছেন না, সেটা সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর টুইট থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল। অমিত শাহ তাতে লিখেছিলেন— ‘আমার দু’দিনের সফরে মালদা ও ঝাড়গ্রামে জনসভা করব।’ সেখানে সিউড়ির কোনও উল্লেখ ছিল না। অমিত যে সিউড়িতে আসছেন না, তা জানতেন দলের শীর্ষ নেতারাও। তবে এতটা এগিয়েও কোনও ভাবে জনসভা সফল না হয়, সেই ভয়ে সে কথা প্রকাশ্যে আনতে চাননি কেউ-ই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy