দিলীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপির কার্যনির্বাহী বৈঠকে দলের বর্তমান নেতৃত্বকে কার্যত তুলোধোনা করলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলের উপরের তলার সঙ্গে নিচু তলার সংযোগের অভাবের কথা তুলে ধরে কড়া সমালোচনা শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। বৈঠকে উপস্থিত ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল তার আগে সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ‘ছুৎমার্গ’ রেখে সংগঠন করলে জেলা সভাপতিদের বদল করার হুঁশিয়ারি দেন। ওই বৈঠকেই ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দেওয়ায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মোদী সরকারের নবম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেশব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে রাজ্য জুড়ে কর্মসূচির প্রস্তুতি নিতে রবিবার জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে বিজেপির রাজ্য কার্যনির্বাহী বৈঠক ছিল। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে দিলীপ দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে খেদ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, দলের সংগঠন কাগজে-কলমে হচ্ছে। মণ্ডল স্তরে সংগঠন নেই। অঞ্চল কমিটি হয়েছে কিন্তু লোক নেই। তাঁর সংযোজন, দলের মোর্চাগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে না। মূল দলের সঙ্গে তাদের কোনও বোঝাপড়া নেই। সূত্রের খবর, বৈঠকে দলের জেলা স্তরের সংগঠন নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর দাবি, জেলার পদাধিকারীদের নিয়ে বৈঠক ডাকলে চার-পাঁচ জনের বেশি উপস্থিত থাকেন না। বৈঠকে প্রথম পর্বের শেষ বক্তা হওয়ায় দিলীপের বক্তৃতার প্রতিক্রিয়ায় ওই বৈঠকে আর কেউ বলার সুযোগ পাননি।
এই প্রসঙ্গে পরে প্রশ্নের জবাবে দিলীপ বলেন, “উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে জেলায় জেলায় ঘুরে আমার যা অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটাই বলেছি। দলের যেখানে ভুল-ত্রুটি হচ্ছে, সেটা ধরিয়ে দিয়েছি। নতুন ছেলেরা দায়িত্ব পেয়েছে, তাদের তো অভিজ্ঞতা কম। ওদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আমি সেই কথাগুলিই বলেছি। বাকিদের পছন্দ হয়েছে।’’
সভায় স্বাগত ভাষণে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, আগামী ৩০ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মোদী সরকারের সাফল্যের প্রচার অভিযান চলবে। বিশেষ ভাবে পালন করা হবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বলিদান দিবস। সুকান্ত এ দিন বলেন, লোকসভাভিত্তিক সভার কথা বলা হলেও তাঁরা মণ্ডলভিত্তিক সভায় জোর দিচ্ছেন। বিধানসভাওয়াড়ি সব মোর্চাকে একত্রিত করে সংযুক্ত মোর্চার সম্মেলন করা হবে। মাথায় রাখতে হবে, লোকসভা ভোটের আগে এত বড় প্রচার অভিযান দল আর পাবে না। তাই সর্বশক্তি দিয়ে এই প্রচারে নামার কথা বলেন তিনি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বলেন, রাজ্য সরকার স্টিকারের রাজনীতি করছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে নাম বদলে রাজ্য সরকারের স্টিকার লাগিয়ে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মৎস্য যোজনার নাম বদলে বাংলা মৎস্য যোজনা করেছে। তিনি জানান, ওই দফতরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালাকে চিঠি লিখে অনুরোধ করবেন, যত দিন না পুরোনো নাম ফিরিয়ে দিচ্ছে, তত দিন যেন কেন্দ্র টাকা না দেয়। পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, “শুভেন্দু ছোট বেলায় প্রেম করতেন। প্রচুর প্রেমপত্র লিখতেন। সেই প্রেম টেকেনি। কিন্তু চিঠি লেখার অভ্যাসটা রয়ে গিয়েছে! তাই এখন যাকে পারেন, চিঠি লেখেন!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy