মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছেন ইয়েচুরি।
বাম ঐক্যকে সুদৃঢ় করতে পার্টি কংগ্রেসে অন্য বাম দলের নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানোই রেওয়াজ। ফরওয়ার্ড ব্লকের সেই উদ্যোগের মঞ্চেই উঠে এল ভিন্ন সুর! সৌজন্যে সেই কংগ্রেস!
ফ ব-র মঞ্চে দাঁড়িয়েই তাদের তত্ত্বকে খারিজ করে বিজেপিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট করার পক্ষে ফের সওয়াল করলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। একই মত সিপিআইয়েরও। আবার কংগ্রেসকে বাদ রেখে বাম ঐক্যে জোর দিয়েই যুদ্ধ লড়তে চায় ফ ব, আরএসপি। তবে বাম সূত্রের খবর, রাজ্যভিত্তিক আলাদা বোঝাপড়ার পথেই যাবে সিপিএম। বাংলায় সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া হলে কয়েকটি আসনে অন্তত তাঁরা যাতে লড়ার সুযোগ পান, তার জন্যই সিপিএমের উপরে চাপ বাড়িয়ে রাখছেন শরিক নেতৃত্ব।
মৌলালির রামলীলা ময়দানে বৃহস্পতিবার ফ ব-র পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন এবং এসইউসি নেতারা এক সুরে সাম্প্রদায়িকতার বিপদের কথা বলেছেন। কিন্তু তাঁদের মতের ফারাক স্পষ্ট হয়েছে ওই বিপদ মোকাবিলার প্রশ্নে। ইয়েচুরি ডাক দিয়েছেন গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্যের। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের নির্বাচনী কৌশলের মূল কথাই হবে বিজেপি-বিরোধী সর্বোচ্চ ভোটকে এক জায়গায় আনা। বামপন্থীদের শক্তি, আন্দোলন তো তীব্র করতেই হবে। কিন্তু বিজেপিকে নির্বাচনে হারাতেও হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বাংলার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হবে বিজেপি ও তৃণমূল-বিরোধী ভোটকে এককাট্টা করা।’’ যার মানে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার কথাই ভাবছেন ইয়েচুরিরা।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফলের পরে আজ, শুক্রবার থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। লোকসভা ভোটের জন্য রাজ্যওয়াড়ি পরিস্থিতি বিচারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কৌশলই সেখানে চূড়ান্ত হবে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। আলিমু্দ্দিনের নেতারা বাংলায় কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই লড়তে চান। বিশেষত, পাঁচ রাজ্যে হেরে বিজেপির মনোবলে ধাক্কা লাগার পরে তাঁরা আর দেরি করতে চান না। তাঁরা আপাতত কংগ্রেসের মনোভাব বুঝতে চান। সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেত্রী অমরজিৎ কউর এ দিন ফ ব-র মঞ্চে রাজ্যওয়াড়ি কৌশলের কথাই বলেছেন।
কিন্তু আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামীর বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস আর বিজেপির আর্থিক নীতিতে কোনও ফারাক নেই। কংগ্রেসের নীতির জন্যই বিজেপি ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এ রাজ্যে ২০১৬ সালে আসন সমঝোতা করেছিলাম কিন্তু কংগ্রেস পিছন থেকে ছুরি মেরেছিল! তাই গণতান্ত্রিক কোন শক্তির সঙ্গে হাত মেলাব, খুব ভেবেচিন্তে তা ঠিক করতে হবে।’’ এসইউসি-র পলিটব্যুরো সদস্য সৌমেন বসুর যুক্তি, তিন রাজ্যে বিজেপির প্রতি ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে ভোটের ফলে, কংগ্রেসের পক্ষে ভোট হয়নি। লিবারেশনের পার্থ ঘোষ ‘ফ্যাসিস্ত’ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাস্ত করার কথা বলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy