এবারও এই ভাঙা সেতু পেরিয়েই ভোট দিতে যাবেন বাসিন্দারা।—নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দেড়শ ফুট চওড়া খালের উপর বিপজ্জনক সেতু। দক্ষিন ২৪ পরগনায় কুলপি ব্লকের বেলপুকুর পঞ্চায়েতে রাঙাফলা ও টেংরারচর সংযোগ মন্তেশ্বরী খালের উপর ওই সেতু পার হয়ে এবারও ভোট দিতে যেতে হবে প্রায় ২০০ ভোটারকে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর হুগলি নদীর সংযোগকারী ওই খালে বহু বছর আগে নৌকায় পারাপার চলত। সেই সময় রাতে পারাপার বন্ধ থাকত। ফলে রাতবিরেতে রোগী নিয়ে সমস্যায় পড়তেন বাসিন্দারা। রাতের বেলায় পারাপারের সমস্যার সমাধানে ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়। কিন্তু বছর আটেক আগে কাঠের সেতুটি জোয়ারের তোড়ে ভেঙে যায়। ভাঙা সেতু পঞ্চায়েতের উদ্যোগে গ্রামবাসীরা কোনওমতে বাঁশ দিয়ে মেরামত করে। কিন্তু পাকাপাকি কোনও সংস্কার না হওয়ায় বতর্মানে সেতুটির অবস্থা খুবই বিপজ্জনক। সেতুতে উঠলেই তা নড়বড় করে। তার উপর কোনও আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর অন্ধকারে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করেন এলাকার মানুষ। অথচ প্রতিদিন স্কুলের ছাত্রছাত্রী-সহ দেড় থেকে দু’হাজার সেতু দিয়ে পারাপার করেন। ভাঙা সেতুর কারণে কয়েকবার দুর্ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু সেতু সংস্কারে প্রশাসনের হেলদোল নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা সুজাউদ্দিন মোল্লা, রহিমা বিবিদের অভিযোগ, “সেতু দিয়ে রাঙাফলা, অরুণনগর, দলবর, আড়িপাড়া, ভগবানপুর, রামনগর-সহ সাত-আটটা গ্রামের মানুষ পারাপার করে। যখন ভোট আসে, এলাকায় সব রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে বলেন, তিনি জিতলে প্রথম কাজ হবে সেতুু সারিয়ে দেওয়া। ভাঙা সেতু পেরিয়েই আমাদের ভোট দিতে যেতে হয়। কিন্তু ভোট শেষ হলে কোনও দলের নেতারই দেখা মেলে না। এবারও আমরা ভোট দিতে যাবো। তবে প্রশ্ন, আমাদের ভোটেরই কি শুধু দাম আছে, জীবনের নেই?”
স্থানীয় দলবর আদিবাসি গ্রামের বাসিন্দা বেলপুকুর পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য উজ্জল সিংহ বলেন, “বতর্মানে সেতুর যা অবস্থা, তাতে বিপদ মাথায় করে পারাপার করতে হচ্ছে। সেতু সারানোর দাবি জানিয়ে বহুবার গ্রামবাসিদের সাক্ষর-সহ আবেদন পত্র পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও এবং বিধায়ককে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। তৃণমূল বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদারের বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামীণ পরিকাঠামো (আরআইডিএফ) প্রকল্পের মাধ্যমে ওই সেতু নিমার্ণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। টাকা বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে।”
কুলপির বিডিও সেবানন্দ পন্ডা বলেন, “সেতু সংস্কার করার মতো টাকা আমাদের তহবিলে নেই। তবুও ভোটের কাজে কমী বা ভোটারদের নির্বিঘ্নে পারাপারে জন্য কি করা যায় তা জানতে কয়েকজন বাস্তকারকে সেতু পরিদশর্নে পাঠিয়েছি। যদিও সেতু তৈরির বিষয়টি সেচ দপ্তরের অধীন।
ডায়মন্ড হারবার মহকুমা সেচ দপ্তরের সহকারি বাস্তুকার প্রদীপ হালদার বলেন, “এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy