সোচ্চার বিরোধী দলনেতা। ছবি: তাপস ঘোষ।
বিজেপি-তৃণমূল ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা এখনও হাতিয়ার সিপিএমের। বুধবার গুড়াপের গোপালপুর মাঠে দলের এক কর্মিসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করেই বলেন, “উনি এখানে (পশ্চিমবঙ্গ) বিজেপিকে নিয়ে এসে পদ্মফুল ফুটিয়েছেন। এখন সেই পদ্মের কাঁটাই ওঁর হাতে লাগছে।”
তৃণমূল, বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসকেও এ দিন তুলোধোনা করেছেন সূর্যকান্তবাবু। তিনি বলেন, “দিল্লিতে যে সরকার এত দিন ছিল, তাদের দুর্নীতির জন্য মূল্যবৃদ্ধি বেড়েই চলেছে। ওরা হচ্ছে ওস্তাদ পকেটমার। আর এ রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরে প্রতি ঘণ্টায় দু’জন কৃষক আত্মহত্যা করছে। দিল্লিতে এত দুর্নীতি, দিল্লির অনেক মন্ত্রী এখন তিহাড় জেলে বন্দি।” তাঁর কটাক্ষ, “সবাই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। মুখে গোঁফ নেই অথচ গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল মাখছে। কংগ্রেস-বিজেপি যে খেলা খেলছে, তা গড়াপেটা খেলা।”
এ দিন ধনেখালির মদনমোহনতলায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ একটি দলীয় কার্যালয় ফের খোলেন সূর্যকান্তবাবু। সেখানে দাঁড়িয়ে তাঁর অভিযোগ, “এখানে তৃণমূলের সন্ত্রাস এখনও অব্যাহত। আমাদের কর্মীদের উপরে তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে আমাদের গণতন্ত্র নষ্ট করতে পারবে না।” তিনি মাথা ঠাণ্ডা করে পরিস্থিতি মোকাবিলার পরামর্শ দেন দলীয় কর্মীদের। সূর্যকান্তবাবুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন হুগলির সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহা, দলের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী, রূপচাঁদ পাল প্রমুখ। প্রদীপবাবু বলেন, “ধনেখালি তৃণমূলের সন্ত্রাসে জর্জরিত। আমাদের দলের লোকেরা প্রকাশ্যে বেরোতে পারছেন না।” রূপচাঁদবাবুর কথায়, “তৃণমূল যত ভয় পাচ্ছে, তত সন্ত্রাস বাড়াচ্ছে।”
জেলা তৃণমূলের সভাপতি তপন দাশগুপ্ত অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওরা এক দিকে সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে। আবার বন্ধ হয়ে থাকা পার্টি অফিস খুলছে। দু’টো কী করে সম্ভব? মানুষ সত্যিটা কী জানে। সূর্যবাবুরা সত্যি কথা বলা অভ্যাস করুন।”
দলীয় কার্যালয় খোলার পরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে গোপালপুর মাঠে কর্মিসভা করেন সূর্যকান্তবাবু। সেখানে তিনি বলেন, “কংগ্রেসকে পরাস্ত করে, বিজেপিকে হঠিয়ে দিল্লিতে একটা বিকল্প সরকার স্থাপন করা দরকার। কংগ্রেসের মাথায় টাক পড়ে গিয়েছে। তার চুল আর খুঁজেই পাওয়া যাবে না। অন্য দিকে, বিজেপি দিল্লির লাড্ডু খাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়ে নরেন্দ্র মোদী এক বার এর কাঁধে হাত রাখছেন, এক বার ওর কাঁধে।”
এই প্রসঙ্গেই বামেদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের লড়াইয়ের হাতিয়ার রাজনীতি, মতাদর্শ। কিন্তু এ রাজ্যে ওদের হাতিয়ার বন্দুক আর গুলি।”
নারী নির্যাতন প্রসঙ্গ তুলে মমতাকে বিঁধে বিরোধী দলনেতা এ দিন বলেন, “নারী নির্যাতনে সারা দেশে যদি গোল্ড মেডেল থাকত, তা হলে উনিই সেটা পেতেন। কামদুনি, পার্ক স্ট্রিট, মধ্যমগ্রাম, পোলবার কামদেবপুর-সহ নানা জায়গায় যে সব নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। উনি বলেছেন কিছুই হয়নি। উনি যেটা বলেন কিছুই হয়নি, সেটা বুঝতে হবে, বড় ঘটনা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy