Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম ১০

ভোটের আগে, বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে তেতে উঠল হাড়োয়ার শালীপুর পঞ্চায়েতের খলিসাদি গ্রাম। সিপিএম এবং তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মারামারিতে জখম হন দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন। তাঁদের মধ্যে ছ’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গোলমালের সময়ে গুলিও চলে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। তবে, তাতে কেউ হতাহত হননি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাড়োয়া শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০০:৪৪
Share: Save:

ভোটের আগে, বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে তেতে উঠল হাড়োয়ার শালীপুর পঞ্চায়েতের খলিসাদি গ্রাম। সিপিএম এবং তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মারামারিতে জখম হন দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন। তাঁদের মধ্যে ছ’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গোলমালের সময়ে গুলিও চলে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। তবে, তাতে কেউ হতাহত হননি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

ক’দিন ধরেই বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের নানা জায়গায় রাজনৈতিক অশান্তি লেগে রয়েছে। আজ, শুক্রবার হাড়োয়ায় সিপিএম নেতা গৌতম দেবের সভা হওয়ার কথা। সেই সভার প্রস্তুতি হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে খলিসাদি গ্রামে দলীয় পোস্টার এবং পতাকা লাগাচ্ছিলেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। দলের হাড়োয়া দক্ষিণ লোকাল কমিটির সম্পাদক ফকির আলি-সহ বেশ কয়েক জন সিপিএম কর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই সভায় যাওয়ার জন্য এবং তাঁদের দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রচার করছিলেন। অভিযোগ, তখনই এক দল তৃণমূল কর্মী-সমর্থক লাঠি নিয়ে চড়াও হয়। দু’পক্ষের মারামারি বাধে। ইট ছোড়াছুড়িও হয়। ফকির আলি-সহ কয়েক জন সিপিএম কর্মী একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। ওই বাড়ি ঘেরাও করেন তৃণমূল সমর্থকেরা। পুলিশ গিয়ে ফকির আলিদের উদ্ধার করে। পরে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় হামলার অভিযোগ দায়ের করে।

ফকির আলির অভিযোগ, “এক তৃণমূল নেতার উপস্থিতিতেই আমাদের উপর হামলা চালানো হয়। বাধা দিতে গেলে ওরা গুলিও চালায়। আমাদের আট জন আহত হন।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের দাবি, গৌতম দেবের সভাকে সামনে রেখে গ্রাম দখলের চেষ্টা করলে দলীয় কর্মীরা রুখে দাঁড়ায়। সিপিএমই গুলি চালিয়েছে। ইটও ছুড়েছে। তার জেরে দলের দুই সমর্থকের মাথা ফাটে। বসিরহাট কেন্দ্রের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৌরভ চক্রবর্তীর পাল্টা অভিযোগ, “সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য সিপিএমই পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে।”

বুধবার বসিরহাটের শাঁকচুড়োয় বিজেপির মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার শাসন থানার অদূরে সিপিআই প্রার্থীর গাড়ির চালককে মারধরের অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও কয়েক দিন ধরে সন্দেশখালি, হাড়োয়া, হাসনাবাদ, শাসন, সরবেড়িয়া, ঝুপখালি, বেড়মজুর-সহ বসিরহাটের নানা এলাকায় যেখানে যে দলের ক্ষমতা বেশি, সেখানে সেই দলের কর্মীরা ভোটারদের ভয় দেখিয়ে পরিচয়পত্র কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এ সব ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। বুধবার রিটার্নিং অফিসার সৈকতকুমার দত্ত জানিয়েছেন, সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২১টি অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওয়াচ টাওয়ার আর আলোর ব্যবস্থা করার পর গ্রাম ছেড়ে ইছামতী নদীর ধারে সরে যাবে বিএসএফ, টাকির পুরপ্রধানের মুখ থেকে এমন প্রতিশ্রুতি মেলায় ক্ষোভ প্রশমিত হল গ্রামবাসীদের। ভোট দেবেন বলে ঠিক করলেন তাঁরা। গ্রামে ঢুকতে গেলে পরিচয়পত্র নিয়ে নানা সমস্যা পোহাতে হয় বলে অভিযোগ ছিল টাকি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী গ্রাম জালালপুরের মানুষের। রাত-বিরেতে অসুস্থ মানুষকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময়েও অনেক ক্ষেত্রে হুকুম মেলে না। বিএসএফ কর্মীদের কাছে কাকুতি-মিনতিও কাজে আসে না বলে অভিযোগ। এ বার সকলে ঠিক করেছিলেন, সমস্যা না মিটলে ভোট দেবেন না। সে কথা জানতে পেরে বুধবার ওই গ্রামে যান বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ইদ্রিশ আলি। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় শোধপুর চৌকির বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার, টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হয়, পুরসভার পক্ষে বিএসএফের সুবিধার জন্য ওয়াচ টাওযার এবং নদীর ধারে আলোর ব্যবস্থা হবে। এলাকায় সাড়ে চারশো পরিবারের বাস। গ্রামের মানুষের অভিযোগ, পাচারকারীরা সহজেই গরু নিয়ে পার হতে পারলেও বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে গ্রামে ঢোকার উপরে নানা বাধা নিষেধ। অন্য কিছু সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন ইদ্রিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

party clash haroa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE