গণতন্ত্র। উন্নয়ন। এবং সঙ্গে একটু হিন্দুত্ব।
শহরের মানুষের জন্য এই মোড়কেই দলকে পেশ করলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
ব্যক্তি নয়, গণতন্ত্রই তাঁদের দলের একমাত্র ভিত্তি। দেশের আর কোনও রাজনৈতিক দলে যা নিতান্তই বিরল বলে বুধবার সন্ধ্যায় বিজেপি সমর্থক, বিশিষ্টদের ভিড়ে ঠাসা মহাজাতি সদনে দাবি করলেন অমিত। দর্শকাসনে উপস্থিত লেখক শংকর, কবি বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন সেনাপ্রধান শঙ্কর রায়চৌধুরী প্রমুখ। তাঁদের সামনে অমিতের দাবি, ‘‘দেশের ১৬০০টি দলের মধ্যে একমাত্র বিজেপি-তেই নির্দিষ্ট সময়ে সাংগঠনিক ভোট হয়। দলের অভ্যন্তরীণ
গণতন্ত্র একমাত্র আমাদের দলেই রয়েছে।’’ বিজেপি-র দলীয় গণতন্ত্র বোঝাতে গিয়ে দর্শকদের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমার পরে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি কে হবেন, জানেন?’’ নীরব প্রেক্ষাগৃহ। ফের অমিতের প্রশ্ন, ‘‘সনিয়াজি, মমতাজি’র উত্তরসূরি কে?’’ সঙ্গে সঙ্গে সমস্বরে জবাব, ‘‘রাহুল, অভিষেক!’’
কংগ্রেস, তৃণমূল যে গণতন্ত্র মেনে চলে না, তা বোঝাতে অমিতের আরও ব্যাখ্যা, ‘‘আমাদের দলে দু’বারের বেশি কেউ সভাপতি হয় না। প্রতি তিন বছর অন্তর সাংগঠনিক ভোট হয়। এমনকী, দলের কোনও ত্রুটি চোখে পড়লে তা যে কোনও কর্মী তুলে ধরতে পারেন নির্ভয়ে।’’
শুধু গণতান্ত্রিক কাঠামোই নয়, নীতি-নৈতিকতাও অন্য দলে দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয় বলে দাবি করেছেন অমিত। তত ক্ষণে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন কনক দেবনাথ, মনোজ পাণ্ডে, অনুপম দত্ত এবং রঞ্জন সেন। কনকবাবু এবং মনোজ কয়েক মাস আগেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছিলেন। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ চার জনের হাতেই বিজেপি-র পতাকা তুলে দেন।
আরও পড়ুন:কাজ সহজ করে দিচ্ছে তৃণমূলই
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বারবারই উষ্মা প্রকাশ করেন তৃণমূল নেত্রী। অমিত বরং এ দিন পাল্টা বলেছেন, ‘‘রাজ্যের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব দূর করার মতো বিভিন্ন খাতে কেন্দ্র প্রচুর টাকা পাঠাচ্ছে। কিন্তু সে টাকা তৃণমূল স্তরের মানুষ পাচ্ছেন না। টাকাগুলো যাচ্ছে কোথায়?’’ বাংলায় বিজেপি-র ঘাঁটি শক্ত হলে নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের রথে জনতার ফায়দা হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
অমিতের মুখে তৃণমূল-বিরোধিতার ঝাঁঝ পেয়ে প্রক্ষাগৃহে তখন তুমুল হাততালি। যদিও তৃণমূলের তরফে মানস ভুঁইয়া পাল্টা তথ্য দিয়ে বলেছেন, ‘‘দু’লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েও রাজস্ব বাড়িয়ে যে ভাবে উন্নয়নের পথে রাজযকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, ইতিহাসে তা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কেন্দ্র তো পরপর প্রকল্পে বরাদ্দ
ছাঁটাই করছে।’’
মহাজাতির অনুষ্ঠানের সরস্বতী বন্দনা রেখে তাঁদের হিন্দুত্বের ছোঁয়া বজায় রেখেছেন অমিতেরা। আর বাংলার নাগরিকদের কাছে তাঁর আবেদন, ‘‘অন্যদের সুযোগ দিয়েছেন। এক বার আমাদের দিয়ে দেখুন। দ্বিতীয় বার আর ভোট চাইতে আসব না! নিজেরাই ভোট দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy