প্রকাশিত নেতাজি নথি। ছবি: সৌভিক দে।
ব্রিটিশ পুলিশ তো বটেই, স্বাধীনতার পর নেহরুর পুলিশও নেতাজির পরিবারের উপর নজর রাখত। রাজ্য সরকারের হাতে থাকা নেতাজি সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল থেকে প্রাথমিক ভাবে এই তথ্যই সামনে আসছে। ১৯৫০ সালে মৃত্যু হয় সুভাষচন্দ্র বসুর দাদা শরত্চন্দ্র বসুর। জানা যাচ্ছে, আমৃত্যু নজরদারি চলেছিল তাঁর উপরেও। ফাইল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে শুধু বলেছেন, “ভাল মন্দ কিছু বলব না, শুধু বলব নেতাজি এবং তাঁর পরিবারকে নিয়ে স্বাধীনতার পরেও অনেক কিছু ঘটেছে, যা দুর্ভাগ্য জনক। কিছু চিঠি থেকে মনে হচ্ছে, ১৯৪৫-এর পরেও জীবিত ছিলেন নেতাজি। আমি চাই সত্য উদ্ঘাটিত হোক।” নেতাজি পরিবারের সদস্য কৃষ্ণা বসুও স্বাধীনতার পরের এই গোয়েন্দা নজরদারির প্রসঙ্গে বলেন, “কেন্দ্রের কাছে আরও অনেক ফাইল রয়েছে। আমি চাই সেগুলিও প্রকাশ্যে আসুক।”
নেতাজি পরিবারের অন্য সদস্য চন্দ্র বসু দাবি করেন, “হাওড়া সিআইডির একটি ফাইল অনুযায়ী, চল্লিশের দশকের শেষ দিকে নেতাজিকে রাশিয়া এবং চিনে দেখা গেছে। মার্কিন এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের দাবি অনুযায়ী, তিনি নতুন একটি সেনাবাহিনী নিয়ে দেশে ঢুকতে চেয়েছিলেন।”
দীর্ঘদিন রাজ্য সরকারের হেফাজতে থাকার পরে শুক্রবার প্রকাশ্যে এল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল। মানিকতলায় কলকাতা পুলিশ মিউজিয়ামে ওই নথি সংক্রান্ত ডিভিডি প্রকাশ করলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ নেতাজির পরিবারের হাতে সেই ডিভিডি তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকেও দেওয়া হয় ওই ডিভিডি। আজ থেকেই আমজনতা সেগুলি দেখতে পাবে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসু-সহ নেতাজি পরিবারের একাধিক সদস্য। প্রকাশিত নথিতে মোট দশ বছরের তথ্য আছে বলে জানিয়ে সুরজিতবাবু বলেন, “১৯৩৯ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত নেতাজি সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে এই ফাইলগুলিতে। ১৯২২ সালের একটি ফাইলও রযেছে। মোট ১২৭৪৪ পাতা রয়েছে ফাইলগুলিতে। নথিগুলিকে নির্দিষ্ট ক্রমে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ডিজিটাল রূপ দেওয়া হয়েছে সব গুলিকেই।”
১১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ এবং রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের (আইবি) হেফাজতে থাকা নেতাজি-নথি প্রকাশ করা হবে।
এই সংক্রান্ত আরও খবর:
এ বার কেন্দ্রও প্রকাশ করুক নথি: কৃষ্ণা বসু
নেতাজি রহস্য: সেই সময়ের আনন্দবাজারে
নানা ভূমিকায় নেতাজি, আনন্দবাজার আর্কাইভে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy