মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে আমপান বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে আজ, শুক্রবার আমপান-বিধ্বস্ত রাজ্যের পরিস্থিতি সরেজমিন দেখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আকাশপথে এলাকা পর্যবেক্ষণের পরে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে নামবেন তাঁরা। সেখানে রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মূল্যায়ন-বৈঠক করবেন মোদী ও মমতা। দেশে লকডাউন শুরুর পরে এই প্রথম বাইরে বেরোচ্ছেন মোদী।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও ফোনে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। পরে মমতা বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। বুধবারের আমপান-তাণ্ডব সম্পর্কে তাঁকে সব জানিয়েছি। তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’’
মমতা আরও জানান, রাজ্যকে ৫৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হচ্ছে। তার উপরে রাজ্য সরকার বেতন, পেনশন-সহ কারও কোনও বরাদ্দ কাটছাঁট করেনি। করোনা মোকাবিলাতেও বিপুল ব্যয় হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে।
এ দিন রাত পর্যন্ত প্রশাসন সূত্রে যে কর্মসূচি জানা গিয়েছে, সেই অনুযায়ী মোদী দমদমে নামবেন আজ সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ। মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঘণ্টাখানেক আকাশপথে দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করবেন তিনি। পরে বসিরহাটে বৈঠক সেরে ওড়িশার আমপান-ক্ষতি দেখতে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর দফতরও টুইট করে মোদীর আজকের বাংলা, ওড়িশা সফরের কথা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কর্মসূচি সেরে মুখ্যমন্ত্রী চলে আসবেন নবান্নে। সেখানে সনিয়া গাঁধীর ডাকা বিরোধী নেতাদের ভিডিয়ো-বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর আসার সম্ভাবনা বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই শোনা যাচ্ছিল। তবে কখন আসবেন, খুব নিশ্চিত ভাবে সে খবর বিকেল পর্যন্ত রাজ্যের কাছে ছিল না। যদিও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চয়ই চাইব, তিনি আসুন। এলে তো ভালই।’’ এর পরেই দিল্লি এবং নবান্নের মধ্যে আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি ঠিক হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, মোদীর সঙ্গে মমতাও থাকুন, এটাই দিল্লি চেয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাতে সম্মত হন।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্র এই তাণ্ডবের ভয়াবহতা জানতে পেরেছে। পাশাপাশি আমরাও তাদের বলেছি। আশা করি সহযোগিতা পাব। তবে যত ক্ষণ না-পাই, কিছু বলতে পারব না। আমরা কোনও বিতর্ক চাই না।’’
সূত্রের খবর, প্রথমে পরিকল্পনা ছিল, প্রধানমন্ত্রী বিমানে কলাইকুণ্ডায় নামবেন। তার পর কপ্টারে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর ও সংলগ্ন এলাকা দেখে ডায়মন্ড হারবারে যাবেন। সেখানে কথা বলবেন ওই জেলার দুর্গতদের সঙ্গে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন দিল্লিকে জানায়, ওখানে হেলিপ্যাড তৈরি করার মতো পরিস্থিতি এখন নেই। তার পর নবান্ন ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আলোচনার ভিত্তিতে বসিরহাটে মোদীর সফর চূড়ান্ত হয়।
যে মাঠে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টার নামার কথা, তার খুব কাছেই রয়েছে কোভিড কোয়রান্টিন কেন্দ্র। প্রাথমিক ভাবে সেটি সরিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গ উঠলেও এসপিজি জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য ওই কেন্দ্র সরানো যাবে না। এর পরে রাজ্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করে ওই মাঠেই কপ্টার নামানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। বুলবুলের ক্ষয়-ক্ষতি দেখতে একই জায়গায় নেমেছিল মমতার কপ্টার। সূত্রের খবর, হেলিপ্যাডের কাছে রাজ্য সরকারের ‘কর্মতীর্থ’ ভবন আছে। সেখানেই মমতা-সহ সকলের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন মোদী।
মোদী কথা বলতে পারেন সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জের দুর্গতদের সঙ্গেও। তবে মমতাকে সঙ্গে নিয়ে মোদী কোনও ত্রাণশিবিরে যাবেন, নাকি দুর্গতদের তাঁদের সামনে আনা হবে, রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত তথ্য মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy