E-Paper

প্রতিরোধী জীবাণুর উৎস কি পাখি, উদ্বেগ

বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গন এবং আশপাশের পাখিদের বিষ্ঠায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ই-কোলাই ব্যাক্টিরিয়ার হদিস মিলেছে বলে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রকাশ।

— প্রতীকী চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:২৮
Share
Save

পানকৌড়ি, শামুকখোলের মতো বাংলার চেনা পাখিরাও অ‍্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব‍্যাক্টিরিয়ার উৎস হয়ে উঠতে পারে বলে একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে। বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গন এবং আশপাশের পাখিদের বিষ্ঠায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ই-কোলাই ব্যাক্টিরিয়ার হদিস মিলেছে বলে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রকাশ। ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব অ্যানিম্যাল হেলথ’-এর একটি প্রতিবেদনে সম্প্রতি বিষয়টি উঠে এসেছে।

জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও তার আশপাশের পানকৌড়ি পাখিরা তাদের অন্ত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ই-কোলাই ব্যাক্টিরিয়া বহন করছে। যা সেফিক্সিন, টাইকারসিলিন-ক্ল্যাভুলেনিক অ্যাসিড, পাইপারাসিলিন-ট্যাজোব্যাকটাম-এর মতো উচ্চক্ষমতার অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধী। এই পাখিরা এই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ই-কোলাই বহন করার ফলে ধরে নেওয়া যেতেই পারে, এরা প্রকৃতিতে এই ধরনের সাংঘাতিক জীবাণু সরবরাহ করছে, যা পরবর্তীতে মানুষকে আক্রমণ করতে পারে। আর তখন ই-কোলাই নির্মূলকারী এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো মানুষের দেহে কাজ করবে না।

এই অনুসন্ধানের মুখ্য গবেষক, প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মাইক্রোবায়েলজি বিভাগের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলেন, “পানকৌড়ি, শামুকখোলের মতো গ্রাম-বাংলার পাখিও যে অ‍্যান্টিবায়োটিক রেজ়িস্ট্যান্ট ব্যাক্টিরিয়া তৈরির উৎস হতে পারে, তা গবেষণায় প্রথম জানা গেল। এর ফলে পরিবেশ, পশুপাখি ও মানুষকে নিয়ে একত্র স্বাস্থ্য ভাবনার উপযোগিতাই জোরালো হল।”

বেলগাছিয়ার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ওই সব পাখি ও মানুষের সহাবস্থান। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মলমূত্র, হাসপাতাল বর্জ্যসহ নির্গত ব্যাক্টিরিয়া পাখিদের দেহে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মানুষের দেহ থেকে নির্গত ব‍্যাক্টিরিয়াই পাখিদের দেহ মারফত মানবদেহে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে বড় জলাশয় রয়েছে। সেই জলাশয়ের জলে লোকজন স্নান, কাপড় কাচা, বাসন মাজা সারছেন। আবার ওই জলাশয়েই বাস পানকৌড়ি, শামুকখোলদের বসবাস। সিদ্ধার্থের কথায়, ‘‘একই জলাশয়ে পক্ষীকূল ও মানুষের সহাবস্থানের জন্য মানবদেহে নিঃসৃত রেজ়িস্ট্যান্ট ব্যাক্টিরিয়ার সঙ্গে পাখিদের দেহের নিরীহ ব্যাক্টিরিয়ার জিন আদানপ্রদান ঘটছে। এর ফলে রেজ়িস্ট্যান্ট ব্যাক্টিরিয়াল স্ট্রেন তৈরি হচ্ছে। সেই ব‍্যাক্টিরিয়াই পাখির বিষ্ঠা মারফত অন্য প্রাণী ও মানুষের দেহে ঢুকছে। যা মানুষের জন‍্য বিপদের।’’ আর এক গবেষক ইন্দ্রনীল সামন্তের আশঙ্কা, ‘‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজ়িস্ট্যান্ট স্ট্রেন প্রকৃতি থেকে মানুষে এবং অন্য প্রাণীদের মধ্যে চক্রাকারে চলাচল করা আশঙ্কার বিষয়।’’

বেলগাছিয়া মেট্রো সংলগ্ন এলাকা এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের উঁচু গাছগুলিতে বর্ষার শেষে শামুকখোল, পানকৌড়িদের আনাগোনা পরিচিত দৃশ‍্য। বর্ষার পরে পাখিদের প্রজননের সময়। ডিম ফুটে বাচ্চা হলে তা বড় করে পাখিরা আবার ফেব্রুয়ারিতে অন্যত্র চলে যায়। প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, গত দু’বছর ধরে এই এলাকায় লক্ষণীয় ভাবে পানকৌড়ির সংখ্যা বাড়ছে। গত বছরে নাইটহেরনও দেখা গিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Birds Virus

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।