সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা বলছেন, বাংলায় তাঁরা ৩৫৬ ধারা জারি করার পক্ষপাতী নন। কিন্তু বিজেপি নেতাদের ওই মুখের কথায় আস্থা রাখছে না সিপিএম। তারা বরং আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল, রাজ্যে শাসক দলকে ভাঙিয়ে যদি সরকারকে সংখ্যালঘু দেখিয়ে কোনও ভাবে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির চেষ্টা হয়, তা হলে বিরোধী দল হিসেবেও তারা সেই প্রয়াসের কড়া বিরোধিতা করবে।
সিপিএমের অবস্থান বরাবরই রাজ্যে নির্বাচিত সরকারকে অপসারণ করে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য সফরের দিনে ফের সেই অবস্থান তুলে ধরেই তারা মনে করিয়ে দিয়েছে, নরেন্দ্র মোদী-শাহের জমানায় বিভিন্ন রাজ্যে ‘পিছনের দরজা’ দিয়ে সরকার দখল করেছে বিজেপি। বাংলায় তৃণমূল আগে বিরোধীদের দল ভাঙিয়েছে, এখন সেই খেলায় নেমেছে বিজেপি। সিপিএমের আশঙ্কা, একের পর এক বিধায়ককে দলে টেনে রাজ্যের সরকারকে সংখ্যালঘু দেখানো এবং রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার চেষ্টা করতে পারে গেরুয়া শিবির। এই সূত্রেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র শনিবার বলেছেন, ‘‘আমরা বিরোধী দল। কিন্তু রাজ্যের সরকার নির্বাচিত। দল ভাঙিয়ে সংখ্যার প্রশ্ন তুলে বা কোনও ভাবে ৩৫৬ ধারা জারি করার চেষ্টা হলে আমরা তার প্রবল বিরোধিতা করব। আমাদের নীতিগত অবস্থান থেকেই আমরা এই ধরনের পদক্ষেপের বিরোধী।’’
মেদিনীপুরে এ দিন এবিপি নিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শাহ ফের বলেছেন, বাংলায় তাঁরা ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের পক্ষে নন। তাঁর মতে, সাংবিধানিক ভাবেই তেমন পদক্ষেপে যথেষ্ট জটিলতা আছে। তা ছাড়া, কয়েক মাস পরেই বিধানসভা ভোট। গণতান্ত্রিক ভাবেই তৃণমূলের সরকার পরাস্ত হবে বলে শাহের দাবি। সম্প্রতি রাজ্যে এসে একই কথা বলেছিলেন নড্ডাও। রাজ্যে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের মতো নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, এ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার নজিরবিহীন অবনতির কারণেই ৩৫৬ ধারা জারি করা উচিত।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিয়ে রেখেছেন, ‘‘সাহস থাকলে ৩৫৬ করে দেখাও! তাতে আমারই সুবিধা।’’ একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘নানা নেতাকে দিয়ে হুমকি না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যখন হাতে আছে, হিম্মত থাকলে বিজেপি ৩৫৬ ধারা জারি করুক! তার পরে বাংলার মানুষ বুঝে নেবে!’’
তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারীর সদলবল বিজেপিতে যোগদানকেও এ দিন বিঁধেছেন সূর্যবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপিতে গেলেই ধোয়া তুলসী পাতা হয়ে গেলেন, তা তো হয় না! যে সব অভিযোগ আছে, তার বিচার হতে হবে। নারদা-সহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকার কী করেছে, তার জবাব দিতে হবে বিজেপিকেও।’’ সূর্যবাবুর আরও মন্তব্য, ‘‘বাংলায় কে প্রথম, কে দ্বিতীয় হবে, সেটা দলবদলুরা ঠিক করবেন না! ঠিক করবেন বাংলার মানুষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy