বাড়তি চাহিদা এবং বাসের আকালের কথা ভেবে রুট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। কিন্তু তাতে গোঁসা হয়েছে কাউন্সিলরের। তাঁর দাবি, পুরনো রুটেই বাস চালাতে হবে! তাঁর অনুগামীদের তাণ্ডবে প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে ওই রুটের বাস। খাস কলকাতায় এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরিবহণমন্ত্রী বিহিত করার বার্তা দিয়েছেন পুলিশ কমিশনারকে। আর বাস মালিকেরা অন্যায়ের প্রতিকার চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন আদালতের।
ঘটনা লেকটাউনের। হাওড়া থেকে লেকটাউন পর্যন্ত চলাচলকারী ২১৫ নম্বর বাসের রুট সম্প্রতি সম্প্রসারণ হয়েছে নিউটাউন পর্যন্ত। নিউটাউনের দিকে যাত্রী বাড়ছে কিন্তু পর্যাপ্ত বাস নেই, এই যুক্তিতে কয়েক মাস আগে পরিবহণ দফতরের কাছে রুট সম্প্রসারণের আর্জি জানিয়েছিল ২১৫ রুট কমিটি। পরিবহণ দফতর সেই আর্জিতে সম্মতি দেওয়ায় ২১৫ রুট হাওড়া থেকে ভায়া লেকটাউন নিউটাউন যাওয়ার কথা। কিন্তু এর পরেই বেঁকে বসেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মানস রায়। রুট কমিটির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, শাসক দলের ওই কাউন্সিলরের অনুগামীরা বাস চালকদের হুমকি দিয়ে চাবি কেড়ে নিয়েছেন। রুট কমিটির কর্মকর্তাদের বাড়িতে হুমকি দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত পর্যন্তও তাঁদের বাড়ির সামনে দাপিয়ে বেড়িয়েছে বাইক বাহিনী। গুন্ডামির জেরে দিনদশেক ধরে ওই রুটে বাস চলাচল প্রায় বন্ধ। রাস্তায় চলছে মাত্র গোটাপাঁচেক বাস।
রুট কমিটির তরফে অভিযোগ, লেকটাউন থেকে বাসরুট নিউটাউনে এগিয়ে যাওয়ায় বাস থেকে তোলা আদায় হচ্ছে না বুঝেই স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুগামীদের এমন উৎপাত। যার জন্য সরকারি নির্দেশ পর্যন্ত মানা হচ্ছে না। রুট কমিটির অন্যতম কর্তা তপন রায়ের কথায়, ‘‘খুব ভয়ে আছি। কাউন্সিলরের মদতে সারদাপল্লির সঞ্জয়ের বাইক বাহিনী হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রাণের আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছি।’’ পুলিশ-প্রশাসনের দিক থেকে সাহায্য না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আদালতের পথে গিয়েছে রুট কমিটি। কলকাতা হাইকোর্টে আজ, সোমবার ওই আবেদনের শুনানি হতে পারে।
সরকারি সবুজ সঙ্কেতের পরেও এমন আব্দারের কথা কানে গিয়েছে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিধাননগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা দক্ষিণ দমদম পুরসভার উপ-পুরপ্রধান সুজিত বসুর সঙ্গে। সমস্যা মেটাতে বলেছেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকেও। মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘পরিবহণ দফতর রুট সম্প্রসারণে ছাড়পত্র দিয়েছে। তার পরে এমন ঘটনা মানা যায় না। বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার বিষয়টা দেখবেন।’’ বিধায়ক সুজিতবাবু অবশ্য রবিবার মুখ খুলতে চাননি। একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর সহযোগী ফোন ধরে জানিয়েছেন, দাদা এখন ব্যস্ত আছেন।
পুজোর মুখে আপাতত ভোগান্তি যাত্রী এবং বাসকর্মী ও মালিকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy