প্রেমবাজারের কারখানায় তৈরি হচ্ছে পিপিই কিট। নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় জরুরি পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) কিটের আকাল এখন দেশ জুড়ে। বাজারে একবার ব্যবহার যোগ্য পিপিই কিটও অপ্রতুল। চাহিদা আর জোগানে ভারসাম্য বজায়ে কালঘাম ছুটছে সরকারের। এই সঙ্কটকালে খড়্গপুরের নাসির আলি যেন মুশকিল আসান। আইআইটি-র প্রযুক্তিগত সহায়তায় বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পুনর্ব্য বহারযোগ্য পিপিই কিট ও মাস্ক তৈরি করছেন পেশায় দর্জি নাসির।
খড়্গপুর আইআইটি সংলগ্ন প্রেমবাজারে নাসিরের কারখানায় এই লকডাউনেও দিন-রাত এক করে কাজ চলছে। প্রাথমিক ভাবে আইআইটি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মাস্ক তৈরি শুরু করেন তিনি। আইআইটি কর্তৃপক্ষ নিজেদের হাসপাতাল, নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মীদের জন্য ইতিমধ্যেই নাসিরের থেকে ২০টি পিপিই কিট ও প্রায় ৪ হাজার মাস্ক নিয়েছেন। আরও হাজার চারেক মাস্কের বরাতও দিয়েছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের কানে উঠতেই খোদ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক নাসিরকে ডেকে পাঠান। পুনর্ব্যবহার যোগ্য পিপিই কিট পছন্দ হয় জেলাশাসক রশ্মি কমলের। এক হাজার পিপিই কিটের বরাত দেন জেলাশাসক। রশ্মি বলেন, “আইআইটি-র পরামর্শে ওই দর্জি পিপিই কিট তৈরি করায় আমরাও এক হাজার অর্ডার দিয়েছি।” জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক অয়ন নাথের কথায়, “এখন পিপিই নিয়ে যে সঙ্কট দেখা দিয়েছে তাতে এই কিট পুনর্ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় আশা করছি সমস্যা মিটবে।”
এখন তাই দম ফেলার ফুরসত নেই নাসিরের। ভাই তাহির আলি-সহ ৮ জন কর্মীকে নিয়ে জোরকদমে কাজ চালাচ্ছেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরেও তাঁর আর একটি কারখানাতেও চলছে কাজ। নাসির জানালেন, সম্পূর্ণ সুতির ঠাস বুননের কাপড় ব্যবহার করে মাস্ক ও পিপিই কিট বানানো হচ্ছে। লকডাউনে কিছু সমস্যাও হচ্ছে, বিশেষ করে কাঁচামালের জোগানে। নাসির বলেন, “লকডাউনের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে কারখানা চালাতে না করেছিল বাড়ির লোক। কিন্তু এখন তো দেশ সঙ্কটে। তাই যাবতীয় সতর্কতা নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, মাস্ক পরে, হাত জীবাণুমুক্ত করে আমরা কাজ করছি।’’
শুধু পিপিই কিট নয়, দর্জি নাসির আলির কারখানায় তৈরি আইআইটি-র নকশায় তৈরি মাস্কও সাড়া ফেলেছে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আইআইটি-র বি সি রায় হাসপাতালের এক চিকিৎসক আমাকে এই মাস্ক উপহার দিয়েছেন। মাস্কটি ত্রিস্তরীয় হওয়ায় বিজ্ঞানসম্মত বলেই মনে হয়েছে। পিপিই কিটও পুনর্ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় খুব ভাল।” আইআইটি-র প্রিন্সিপাল মেডিক্যাল অফিসার সমীর দাশগুপ্ত জানালেন, এখন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রাথমিক সুরক্ষা সব চেয়ে জরুরি।
সে ক্ষেত্রে নাসিরের তৈরি জিনিস কার্যকর। তবে করোনা চিকিৎসার বেশ কয়েকটি পর্যায় রয়েছে। যাঁরা সরাসরি করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসছেন, তাঁদের কিন্তু আইসিএমআর বা হু-র নির্দেশিকা মেনে পিপিই কিট ব্যবহার করা উচিত।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy