গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের কোটায় ঢুকে পড়েছিল আগেই। এ বার তা আরও বাড়ল। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে নোভেল করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ১৭৫ জন, দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সোমবার এই সংখ্যাটা ৩ হাজার ৮০ এবং রবিবার ৩ হাজার ৬৬ ছিল।
এ দিন নতুন করে এত সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হওয়ায় রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২২ হাজার ৭৫৩। তবে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বেড়ে চলেছে, তেমনই সুস্থতার হার আশা জোগাচ্ছে রাজ্য সরকারকে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৯২ হাজার ৬৯০ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন, যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৯৮৭ জন। তার ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫.৫১ শতাংশ।
গত দু’দিনের তুলনায় এ দিন যদিও মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে রাজ্যে। সোমবার রাজ্যে ৪৫ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছিলেন। রবিবার প্রাণ হারান ৫১ জন করোনা রোগী। এ দিন মৃত্যুসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২ হাজার ৫২৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৭ হাজার ৫৩৫ করোনা রোগী।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: কিষেণজির জায়গায় কিষাণ? জঙ্গলমহলে ফের বিপদসঙ্কেত পাচ্ছেন গোয়েন্দারা
প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত কয়েক দিন একটানা সংক্রমণের হার নীচে নামছিল। ১৫ অগস্ট রবিবার এই সংক্রমণের হার ছিল ৮.৯৮ শতাংশ, যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। গত রবি ও সোমবার তা বেড়ে ৯.৫ শতাংশ দাঁড়ায়। আজ আবার সংক্রমণের হার তার চেয়ে কিছুটা কমে ৯.০৪ শতাংশ হয়েছে।।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩৫ হাজার ১০৭ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। তার পরেও সংক্রমণের হার কমে যাওয়াটা ভাল লক্ষণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে সোমবার রাজ্যে ৩২ হাজার ৩১৯ জনের করোনা পরীক্ষা হয়। রবিবার সেই সংখ্যাটা ছিল ৩২ হাজার ২৮৬।
মোট সংক্রমণ এবং মৃত্যু, দুইয়ের নিরিখেই এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে কলকাতাই এগিয়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৬০০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৭ জন করোনা রোগীর। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ৩৩ হাজার ৪৬৭ জন করোনা রোগীর হদিশ মিলেছে। মোট মৃত্যুসংখ্যা ১ হাজার ১১০।
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে এখনও পর্যন্ত ২৫ হাজার ৯০৪ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই সংক্রমিত হয়েছেন ৬৬৪ জন। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৫৮০ জন মারা করোনা রোগী মারা গিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৯৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। সবমিলিয়ে সেখানে এখনও পর্যন্ত ৮ হাজার ৯৫৮ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ১৪০ জন।
হাওড়ায় এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে সেখানে। এখনও পর্যন্ত হাওড়ায় ১১ হাজার ৫৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা ৩০৫।
হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরেও এ দিন কয়েকশো মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে যথাক্রমে ১৩০, ২৪০ ও ১৫৯ জন নতুন করোনা রোগীর হদিশ মিলেছে। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুরে সংখ্যাটা যথাক্রমে ১০৫, ১০৯ এবং ১০৮।
আরও পড়ুন: অতিমারিতে কী ভাবে হবে ভোট? ৩ দিনের মধ্যেই গাইডলাইন নির্বাচন কমিশনের
নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি, জেলাগুলিতে মৃত্যুও অব্যাহত। গত ২৪ ঘণ্টায় হুগলিতে ৪ জন করোনা রোগী মারা গিয়েছেন। ২ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে। পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, নদিয়া, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিংয়েও ১ জন করে করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy