পরীক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ছবি: রয়টার্স।
উপসর্গহীন কোভিড-১৯ আক্রান্তদের রোগের বহিঃপ্রকাশ হতে হতে কখনও ২৭ দিন, কখনও ৩৫ দিন কেটে গিয়েছে। তত দিনে তাঁদের থেকে সংক্রমিত হয়েছেন বহু মানুষ। এমন অজস্র নজির ভাবিয়ে তুলছে বিজ্ঞানীদের। উপসর্গহীন রোগীদের ক্ষেত্রে তাই নির্দিষ্ট জনস্বাস্থ্য নীতি তৈরি প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা।
ভাইরোলজিস্টদের বক্তব্য, একটা জ়োনকে ছোট ইউনিটে ভাগ করে সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা করতে হবে। তাতে বোঝা যাবে, কারা উপসর্গহীন। তাঁদের বাড়িতেই কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হবে। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে হবে। এমনও হতে পারে কোয়রান্টিনে থেকেই তাঁরা সেরে গেলেন।
মাইক্রোবায়োলজিস্ট সুখেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘কোনও প্যাথোজেন শরীরে প্রবেশের পরে তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। প্যাথোজেন বিশেষে প্রতিটি অ্যান্টিবডির চরিত্র আলাদা। সেরোলজিক্যাল পরীক্ষায় রক্তে সংশ্লিষ্ট রোগের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলে বোঝা যাবে উপসর্গ না-থাকলেও তিনি সেই রোগে আক্রান্ত।’’
‘ইন্ডিয়ান ভাইরোলজিক্যাল সোসাইটি’-র সেক্রেটারি জেনারেল, বিজ্ঞানী যশপাল সিং মালিকের কথায়, ‘‘বাড়িতেও মাস্ক পরা দরকার। কারণ উপসর্গহীন রোগীরা সতর্ক না-হলে অন্যদেরও দ্রুত সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা।’’ তবে উপসর্গহীন রোগীদের পরীক্ষার ফল সব সময় পজ়িটিভ আসবে কি না, তা নিয়েও সংশয়ে গবেষকদের একাংশ। ‘ইনস্টিটিউট অব সাসটেনেবল হেল্থ’-এর অধিকর্তা প্রিয়া বালসুব্রহ্মণ্যম বলেন, ‘‘অনেক উপসর্গহীন রোগী ভাইরাস বহন করছেন, অথচ পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। এটাই ঝুঁকির।’’ ইমিউনোলজিস্ট অরিন্দম ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘যে-হেতু অ্যান্টিবডি তৈরি হতে কয়েক দিন সময় লাগে, তাই প্রথম দিনে পরীক্ষা করলে হয়তো ফল নেগেটিভ আসতেও পারে।’’
আরও পড়ুন: অধিকাংশ জায়গায় ৩ মে-র পরেও লকডাউন চলবে, জানালেন মোদী
আরও পড়ুন: কী ভাবে পাল্টাচ্ছে করোনাভাইরাস, চেনাচ্ছেন দুই বাঙালি
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাস সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ও মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম)-এর সংক্রমণের সময়েও এমন রোগী ছিলেন। সার্সের সময়ে দেখা গিয়েছিল, অন্য শ্বাসযন্ত্রজনিত সংক্রমণের তুলনায় এলাকাবিশেষে উপসর্গহীন রোগীর হার প্রায় ১৩% বেশি। কে উপসর্গহীন এবং কার মধ্যে উপসর্গ দেখা যাবে, তা প্রধানত নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ ‘হোস্ট’-এর প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে। ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় ডাইনামিকস, ইকনমিকস অ্যান্ড পলিসি’-র অধিকর্তা রামনন লক্ষ্মীনারায়ণ বলেন, ‘‘সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ এটাই। তাই উপসর্গ থাকুক বা না-থাকুক, ১০০% সাবধানতাই একমাত্র দাওয়াই।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy