বঙ্গে করোনা সংক্রমণের সাড়ে চার মাসে বড় ধাক্কা খেল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। এ রাজ্যে কোভিড চিকিৎসায়
প্রথম সারির সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম ওই হাসপাতালে বুধবার নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে একসঙ্গে ২৫ জনের সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে! যার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা না ব্যাহত হয়, সেই আশঙ্কায় ভুগছেন সংক্রামক রোগের হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ।
আইডি সূত্রের খবর, আক্রান্তদের মধ্যে অন্তত দশ জনকে আইডি-তে ভর্তি করানো হয়েছে। আক্রান্তদের পরিজন নিয়ে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৫। বেলেঘাটা আইডি-র সঙ্কট প্রসঙ্গে উপাধ্যক্ষ তথা সুপার আশিস মান্না বলেন, ‘‘যাঁদের উপসর্গ রয়েছে তাঁদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের সেফ হোম এবং হোম আইসোলেশনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতে অভাব না হয়, স্বাস্থ্য ভবন সে ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে গত চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে ২২৯৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। চব্বিশ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। তার মধ্যে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের নিমাই কুণ্ডু (৫৬) নামে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রোগ্রেসিভ ফার্মাসিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। জেলাগুলিতে আক্রান্তের ছবি মোটের উপরে একই রয়েছে। লকডাউনের মধ্যে কলকাতা (৬৮৮), উত্তর ২৪ পরগনা (৫৫৪), হাওড়া (২৫৮) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার (১০৮) আক্রান্তের পরিসংখ্যানে চমকপ্রদ পরিবর্তন নেই।
বেলেঘাটা আইডি-তে এর আগেও কয়েক দফায় অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গত সপ্তাহে এন আর এস হাসপাতালেও চার দিনে শতাধিক আক্রান্তের খবর মিলেছিল। তবে সরকারি চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, এনআরএসের আক্রান্তদের মধ্যে বড় অংশ ছিলেন রোগীরা। কিন্তু আইডি-র মতো প্রথম সারির কোভিড হাসপাতালে এত সংখ্যক নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হলে আশঙ্কা অমূলক নয়। কোভিড হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সবার আগে নার্সের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। স্টোর বন্ধ হলে হাসপাতাল চলবে কী করে? এক জন ফার্মাসিস্ট ইতিমধ্যে আক্রান্ত। আরও দু’জন ফার্মাসিস্টও আক্রান্ত হলেন।’’
প্রসঙ্গত, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে লিউকোমিয়ার পাশাপাশি কোভিডে আক্রান্ত আশঙ্কাজনক এক শিশুর শয্যা জোগাড় করা নিয়ে টানাপড়েনের খবর সামনে এসেছে। চব্বিশ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে মঙ্গলবার রাতে বছর দুয়েকের আরফ আহমেদ খানকে রাজ্যের একমাত্র কোভিড আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ‘মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব’-এ স্থানান্তর করা হয়। ওই হাবে শয্যা না থাকায় এক দিন শিশুকে হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে অপেক্ষা করতে হয়। আপাতত তার অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বিপদ কাটেনি। কোভিড আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে শয্যার চাপের কথা স্বীকার করে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজি জানিয়েছেন, এ দিনই শিশুদের আরও ১৫টি শয্যা বাড়ানো হয়েছে। কোভিড রোগীদের কাছ থেকে ‘উৎকোচ’ নেওয়ার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করাও হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy