—প্রতীকী ছবি
দিনটা তাদেরই। ওই দিন তারা স্কুলে হাজির হয়ে নতুন ক্লাসের বই, খাতা ও ডায়েরি নিয়ে যায়। দিনটিকে কেন্দ্র করে তারা স্কুলে এলে তাদের নতুন ক্লাসে ওঠার আনন্দে ছোটখাটো উৎসবও হয়। কিন্তু এ বার করোনার দাপটে ২ জানুয়ারি রাজ্যে ‘বুক ডে’ বা পুস্তক দিবস বন্ধ। উৎসব তো দূরের কথা, স্কুলে আসারই অনুমতি নেই ছাত্রছাত্রীদের। বই-খাতা তারা পাবেই। কিন্তু পুস্তক দিবসের আনন্দ থেকে এ বার তাদের বঞ্চিত করল অতিমারি।
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সরকারি, সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে এ বছর মিড-ডে মিলের চাল ও অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গেই নতুন বই-খাতা দেওয়া হবে। পড়ুয়াদের হাতে তা দেওয়া হবে না। কোনও পড়ুয়া বই নিতে এলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। বই নিয়ে যাবেন অভিভাবকেরাই। তাঁদের মাস্ক পরে স্কুলে আসতে বলা হয়েছে। করোনার থাবা এড়াতে পড়ুয়াদের যেমন দীর্ঘদিন স্কুল থেকে দূরে রাখা হয়েছে, সেই ব্যবস্থা চলবে আপাতত।
মধ্যমগ্রাম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আশুতোষ ঘোষ জানান, এই দফায় তাঁদের স্কুলে মিড-ডে মিল দেওয়া হবে ৭ জানুয়ারি থেকে। তাই ওই দিন থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন ক্লাসের বই দেওয়া হবে পর্যায়ক্রমে। বইয়ের সঙ্গেই মিড-ডে মিলের চাল, আলু, ছোলা, আয়রন ট্যাবলেট, সাবান দেওয়া হবে। “সাধারণত বুক ডে-তে সব ক্লাসের পড়ুয়ারা একসঙ্গে স্কুলে আসত। কিন্তু এ বার ভিড় হয়ে গেলে অতিমারির স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব হবে না। তাই আমরা অভিভাবকদের পর্যায়ক্রমে আসতে বলেছি,” বলেন আশুতোষবাবু।
বেথুন কলিজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী জানান, তাঁর স্কুলে মিড-ডে মিল দেওয়া হবে ৫ জানুয়ারি থেকে। ওই দিন থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সকাল ও দুপুরে দুই শিফটে মিড-ডে মিলের সঙ্গে বই ও খাতা দেওয়া হবে অভিভাবকদের।
পুস্তক দিবসের উপহার হিসেবে বই-খাতার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তা লেখা গ্রিটিংস কার্ড এবং ডায়েরিও দেওয়ার কথা। বেশ কিছু স্কুলে ডায়েরি ও গ্রিটিংস কার্ড পৌঁছে গিয়েছে। সেগুলি বইয়ের সঙ্গে দেওয়া হবে। যে-সব স্কুলে এখনও সব ক্লাসের জন্য গ্রিটিংস কার্ড ও ডায়েরি পৌঁছয়নি, সেখানে দ্রুত সেগুলি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর।তবে বই-খাতা সংগ্রহের জন্য শুধু অভিভাবকদের স্কুলে আসতে বলা হলেও কার্যক্ষেত্রে সর্বত্র সেটা যে সম্ভব না-ও হতে পারে, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা। বিশেষ করে গ্রামীণ এবং আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকায় অনেক অভিভাবকের পক্ষেই দিনের কাজ ফেলে স্কুলে আসা সম্ভব নয়। “আমাদের স্কুলে ৫ জানুয়ারির পরে মিড-ডে মিলের চাল-ছোলা এবং পুস্তক দিবসের বই একসঙ্গে দেওয়া হবে। অনেক পড়ুয়ার বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। কেউ টোটো, কেউ বা রিকশা চালান। তাঁদের সকলের পক্ষে কাজ ফেলে স্কুলে আসা হয়তো সম্ভব হবে না। পরিস্থিতির চাপেই সব অভিভাবক স্কুলে আসতে পারেন না,” বলেন মৌড়িগ্রামের দুইল্যা পাঁচপাড়া হাইস্কুলের শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy