কারামন্ত্রী উজ্জ্ব্বল বিশ্বাস।—ফাইল চিত্র।
বেশ কিছু খাবার, তেল, জামাকাপড়, সাবান-সহ ৪৫ রকম জিনিস জেল ক্যান্টিনে পাওয়া যাবে। এবং বন্দিদের ক্যান্টিন থেকেই সেগুলে কিনতে হবে। এই নির্দেশ কাল, শুক্রবার থেকে রাজ্যের জেলগুলিতে কার্যকর হবে।
সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যে-সব সামগ্রী জেলে তৈরি হবে এবং ক্যান্টিনে পাওয়া যাবে, বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা আত্মীয়স্বজন সেগুলো আনতে পারবেন না। আনলেও সেগুলো জেলের অন্দরে পাঠাতে দেওয়া হবে না। এই নির্দেশ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। অনেকেরই প্রশ্ন, তা হলে নিকটজনেরা কি বাইরে থেকে আর কোনও সামগ্রী বন্দিদের দিতে পারবেন না? বিষয়টির ‘ভুল ব্যাখ্যা’ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কারামন্ত্রী উজ্জ্ব্বল বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা যায়নি। ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।’’
চা, কফি, কেক, টোস্ট, বিস্কুট-কুকিজ, মুড়ির মতো খাবারের পাশাপাশি লুঙ্গি, হাফপ্যান্ট, ট্রাউজার্স, শাড়ি, সোয়েটার, পুরুষ ও মহিলাদের অন্তর্বাস, সোয়েটার, ব্যাগ, রুমাল, টুথপেস্ট, ছোট তালা-চাবি, নেল কাটার (ছুরি ছাড়া), প্লাস্টিক চিরুনি-সহ ৪৫ রকম সামগ্রী তালিকায় রয়েছে। যার বেশির ভাগই জেলের অন্দরে তৈরি হয় না বলে কারা দফতর সূত্রের খবর। বন্দিদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত যে-সব সামগ্রী জেলে তৈরি হয় না, সেগুলো বাইরে থেকে কিনে আনা হবে। এই নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘অধিকাংশ বন্দির আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। পছন্দমতো সামগ্রী তাঁদের কাছে পৌঁছে দেন আত্মীয়েরাই। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, বন্দিদের নিয়ে তৈরি স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত ক্যান্টিন থেকেই সব জিনিস কিনতে হবে। যাঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়, তাঁরা কিনবেন কী ভাবে?’’ রঞ্জিতবাবুদের দাবি, যে-বন্দির ইচ্ছা হবে, তিনি জেল ক্যান্টিন থেকে জিনিসপত্র কিনবেন। সেই সঙ্গে আত্মীয়েরা যাতে বাইরে থেকে ওই সব সামগ্রী দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও চালু রাখুক সরকার।
কারা দফতরের খবর, মুখরোচক খাবার ক্যান্টিন থেকেই কিনে খেতেন সচ্ছল বন্দিরা। তাতে জেলের খাবার নষ্ট হচ্ছিল। জামাকাপড় ও অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে বেআইনি জিনিসও যথেচ্ছ ঢুকছিল জেলে। সেই অনিয়ম রুখতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
১ মার্চ থেকে ওই নির্দেশ বলবৎ করতে বিভিন্ন জেলের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই নানা অঙ্কের কুপন বন্দিদের দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। ক্যান্টিনে সেই কুপন দিয়ে কোনও বন্দি জানিয়ে দিতে পারেন, প্রথম দিনে তাঁর কী কী জিনিস লাগবে। ওই দিন কত টাকা খরচ হল, ক্যান্টিনের খাতায় তা লেখা থাকবে। কোনও বন্দি এক সপ্তাহে ৫০০ টাকার বেশি খরচ করতে পারবেন না। তবে কোনও বন্দি যদি দু’সপ্তাহের টাকা জমিয়ে ১০০০ টাকার খাবার এবং সামগ্রী কিনতে চান, সেটা করতে বাধা নেই। কিন্তু ১০০০ টাকার বেশি জমানো যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy