সরকারি প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণের বদলে জমি কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে আগেই। সেই পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে শুক্রবার রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, জমির দাম নির্ধারণে কলকাতা-সহ প্রতি জেলায় কমিটি তৈরি হবে। কলকাতার ক্ষেত্রে কমিটির মাথায় থাকবেন ভূমি কমিশনার। এবং জেলাগুলির ক্ষেত্রে জেলাশাসক। নবান্নে শিল্প সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার সাব-কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেনায় জর্জরিত রাজ্য সরকার যেখানে ঋণ মকুব কিংবা ঋণশোধের চাপ থেকে অন্তত কিছু দিনের রেহাই ও ‘বিশেষ প্যাকেজ’ পাওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে নিরন্তর দরবার করে যাচ্ছে, সেখানে জমি কেনার টাকা কোথা থেকে আসবে, সেই প্রশ্নই বড় হয়ে উঠেছে নবান্নের কর্তাদের কাছে। অবশ্য বণিকমহলের একটি অংশ বলছে, জমি কিনেও যদি রাজ্যের থমকে থাকা উন্নয়ন প্রকল্পগুলি এগোয়, তাতে বাংলারই লাভ।
ক্ষমতায় এসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, বেসরকারি তো বটেই, সরকারি প্রকল্পের জন্যও তাঁরা জমি অধিগ্রহণ করবেন না। সেই নীতি আঁকড়ে থেকেই গত নভেম্বর মাসে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্য ঘোষণা করে, পরিকাঠামো, সেতু, সড়ক, গুদাম, পানীয় জল প্রকল্প বা বাঁধ নির্মাণের মতো উন্নয়নমূলক কাজের জন্য জমি কিনবে সরকার। জমি কেনা হবে জেলা পরিষদ ও পুরসভার মতো স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে। বণিক মহলের একাংশের বক্তব্য, সরকারি নীতির কারণে গত চার বছরে শিল্প তো বটেই, এমনকী রাস্তা, সেতু, নিকাশি বা পানীয় জল প্রকল্পের মতো উন্নয়নমূলক কাজেও জমি পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে সরকারের হাতে জমি থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে তা হাতে পাচ্ছে না প্রশাসন। এই কারণে দীর্ঘ কয়েক বছরে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের মতো জরুরি কাজও বন্ধ। এই অবস্থায় জমি কিনেও যদি সরকারি প্রকল্পগুলি রূপায়ণ করা সম্ভব হয়, তাতে রাজ্যেরই মঙ্গল।
নবান্ন সূত্রের খবর, কোনও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য জমি প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট দফতরকে প্রথমে মন্ত্রিসভার শিল্প সংক্রান্ত সাব-কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। সেই অনুমোদন মিললে তা জানাতে হবে ওই কমিটিকে। তার ভিত্তিতে কমিটি জমি চিহ্নিত করে তার দাম নির্ধারণ করবে। সেই কাজ সম্পন্ন হলে জমি কিনবে সংশ্লিষ্ট পুরসভা, জেলা পরিষদ কিংবা কর্পোরেশন।
এ দিন ঠিক হয়েছে, দাম নির্ধারণের কমিটিতে জেলাশাসক বা ভূমি কমিশনার ছাড়াও থাকবেন স্থানীয় ভূমি-রাজস্ব অফিসার, বিশেষ জমি অধিগ্রহণ অফিসার, চেয়ারপার্সনের মনোনীত দু’জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, জেলা পরিষদের ফিনান্সিয়াল কন্ট্রোলার ও চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার, জেলা রেজিস্ট্রার ও জেলা পরিষদের সচিব। জেলা পরিষদের সচিবই হবেন কমিটির সদস্য-সচিব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy