প্রশাসনিক বৈঠকে বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্য মন্ত্রী-আমলা-সচিবেরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
রাজ্যে এখনও ৭১৬টি পঞ্চায়েতে কোনও ব্যাঙ্ক নেই। বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র তেমনটাই জানালেন। যা শুনে বৈঠকে হাজির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্মকর্তাকে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় মোবাইল ব্যাঙ্কিং চালু করতে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মোবাইল ব্যাঙ্ক চালু হলে ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি উঠে যাবে।
বুধবারের প্রসাসনিক বৈঠকে ১০০ দিনের কাজ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দিচ্ছিলেন বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্রমোহন। সেই সময়ে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে অর্থমন্ত্রী অমিতবাবুকে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে এখনও কত ব্যাঙ্ক হওয়া বাকি? জবাবে অমিতবাবু জানান, চার বছর আগে ক্ষমতায় আসার সময় রাজ্যের এক হাজার পঞ্চায়েতে কোনও ব্যাঙ্ক ছিল না। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতার উদ্যোগে কয়েকশো পঞ্চায়েতে ব্যাঙ্ক চালু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পঞ্চায়েত কার্যালয়েই ব্যাঙ্ক খোলার অনুমতি দেয়েছে সরকার। কিন্তু, তার পরেও ৭১৬টি পঞ্চায়েতে এখনও কোনও ব্যাঙ্ক নেই! শুনে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘তা হলে তো কিছুই হয়নি। মাত্র পৌনে ৩০০টি পঞ্চায়েতে ব্যাঙ্ক চালু হয়েছে!’’ এর পরই তিনি সভাগৃহে থাকা ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া-র এক অধিকর্তাকে অনুরোধ করেন, এই সমস্ত জায়গায় মোবাইল ব্যাঙ্কিং চালু করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন যদি সেই পরিষেবা পাওয়া যায়, তা হলে গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে। বিশেষ করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে মোবাইল ব্যাঙ্ক চালু করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘এতগুলি জায়গায় ব্যাঙ্ক না থাকার কারণে মানুষ ১০০ দিনের কাজের টাকা তুলতে পারে না। টাকা কোথাও রাখতে পারে না।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘ব্যাঙ্ক পরিষেবা থাকলে চিট ফান্ডগুলি উঠে যাবে। মানুষকে তো কোথাও টাকা রাখতে হবে!’’
এ দিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ব্যাঙ্কিং সেক্টরে সুযোগ আছে। ব্যবসাও আছে। তিনি আরও জানান, এ রাজ্যে প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছে। আগামীতেও হবে। পাশাপাশি তাঁর দাবি, রাজ্যে আড়াই থেকে তিন লাখ সরকারি নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু, দেনা শোধ করতেই সব টাকা শেষে হয়ে যাচ্ছে। তাই, নতুন করে আর নিয়োগ সম্ভব হচ্ছে না।
জমি নীতি নিয়েও এ দিন মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রাজ্যের জমি নীতি মডেল হতে পারে। জমি অধিগ্রহণ নিয়েও কোনও জবরদস্তি করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ল্যান্ডব্যাঙ্ক থেকে আমরা ১৪ হাজার একর জমি নিয়েছি।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, বাম আমলে সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy