Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

পানাগড়ে পথে বিপদ রোখার বার্তা

রাজ্য জুড়ে চলছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি। কিন্তু তার পরেও এই এলাকায় জাতীয় সড়কে লাগাম পড়েনি দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার আউশগ্রামের শিবদায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পানাগড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে একের পর এক দুর্ঘটনা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন।

রওনা: গুসকরা থেকে বীরভূমের পথে মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

রওনা: গুসকরা থেকে বীরভূমের পথে মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

বিপ্লব ভট্টাচার্য
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০২:১৭
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে চলছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি। কিন্তু তার পরেও এই এলাকায় জাতীয় সড়কে লাগাম পড়েনি দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার আউশগ্রামের শিবদায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পানাগড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে একের পর এক দুর্ঘটনা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনা রুখতে পুলিশ-প্রশাসনকে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন পথ-নিরাপত্তার নিরিখে পানাগড়কে ‘ব্ল্যাক স্পট’ হিসেবে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কতগুলো ব্ল্যাক স্পট আছে। একটা হচ্ছে পানাগড় আর একটা বর্ধমানের ন্যাশনাল হাইওয়ের উপরে। অনেক গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করে।’’

পুলিশ সূত্রেও জানা গিয়েছে, কাঁকসার মুচিপাড়া থেকে পানাগড় রেলওভারব্রিজ পর্যন্ত দুর্ঘটনার সংখ্যাটা একটু বেশিই। যেমন, সপ্তাহখানেক আগেই বিরুডিহার কাছে দুর্গাপুরগামী একটি মোটরবাইকআরোহী নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এমনকী মোটরবাইকটিতে আগুনও ধরে যায়। ওই একই রাতে পানাগড় বাইপাসের শেরপুরের কাছে সার্ভিস রোড ধরে দানবাবা মেলা দেখতে যাওয়ার সময়ে এক ব্যক্তিকে ট্রাক ধাক্কা মারে। মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। ২৮ ফেব্রুয়ারি পানাগড় বাইপাসের পানাগড় গ্রামের কাছে রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে একটি চার চাকা দ্রুতগতিতে ধাক্কা মারে সাইকেল আরোহীকে। প্রাণে বেঁচে গেলেও, গুরুতর জখম হন ওই সাইকেল আরোহী। এই ঘটনার পরে ঘণ্টাখানেক ধরে বাসিন্দাদের একাংশ জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।

তবে সম্প্রতি সবথেকে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি। বাবার জন্য বিরুডিহার কাছে জাতীয় সড়কের পাশে অপেক্ষা করছিল দুই শিশু আদি থাপা ও জিমি থাপা। তাদের বাবা শ্যাম থাপা মোটরবাইক নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো মাত্রই পিছন থেকে তিন জনকেই ধাক্কা মারে একটি চার চাকা গাড়ি। মৃত্যু হয় তিন জনেরই। এই ঘটনার আগের দিনই রাজবাঁধের কাছে জাতীয় সড়কের পাশে থাকা একটি হোটেলে ঢুকে যায় লরি। মৃত্যু হয় হোটেলের নিরাপত্তারক্ষীর।

এই এলাকায় পর পর এমন দুর্ঘটনার পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলেই মনে করছেন বাসিন্দা ও পুলিশকর্মীরা। প্রথমত, জাতীয় সড়ক ছ’লেন হওয়ার পরে যানবাহনের গতি আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। তা ছাড়া লেন ভেঙে যাতায়াত, হেলমেট মাথায় না দেওয়ার মতো প্রবণতাও রয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের আক্ষেপ, বারবার প্রচার চালিয়েও সচেতন করা যাচ্ছে না চালকদের একাংশকে। এ ছাড়া বিরুডিহার কাছে অনেক সময়ই সার্ভিস রোড থেকে জাতীয় সড়কে ওঠার সময় অনেকেই রাস্তার পিছন দিকে না দেখেই উঠে পড়েন চালকদের একাংশ। এর ফলেও বাড়ছে দুর্ঘটনা।

পূর্ব বর্ধমানের ওই সভায় যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, দুর্ঘটনা রুখতে দূরের ‘ওয়াচ টাওয়ার’ থেকে গাড়ির গতিতে নজর রাখতে হবে। এ ছাড়া তাঁর কড়া নির্দেশ, ‘‘বেপরোয়া গাড়ির চলাচল দেখার জন্য নির্দিষ্ট লোক রাখতে হবে। তেমনটা দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাকে ধরবে।’’

পুলিশ জানায়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতোই এ বার থেকে এই এলাকায় কড়া নজরদারি চলবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE