Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

দিদির স্মৃতিতেই প্রস্তাব অঙ্গদানে

রবিবার দুর্গাপুরে ১৩ বছরের মেয়ে মধুস্মিতার অঙ্গদান করেন মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিআইএসএফ জওয়ান দিলীপ বায়েন। তিনি বলেন, ‘‘রমেন্দ্রনাথই প্রথম আমাকে এ কথা বলে। তার পরেই স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই।’’

 রমেন্দ্রনাথ মিশ্র

রমেন্দ্রনাথ মিশ্র

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৭
Share: Save:

জটিল রোগে ভুগে মৃত্যু হয়েছিল দিদির। তাঁর চক্ষুদানের ব্যবস্থা করেছিলেন সিআইএসএফ জওয়ান রমেন্দ্রনাথ মিশ্র। তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় ন’বছর। কিন্তু, মৃত্যুর পরেও যাতে মানব অঙ্গ অন্যের কাজে লাগে, এই ভাবনা রয়ে গিয়েছে মাথায়। তাই সহকর্মীর কিশোরী কন্যার মৃত্যুর পরেও অঙ্গদানের প্রস্তাব দিলেন রমেন্দ্রনাথবাবু।

রবিবার দুর্গাপুরে ১৩ বছরের মেয়ে মধুস্মিতার অঙ্গদান করেন মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিআইএসএফ জওয়ান দিলীপ বায়েন। তিনি বলেন, ‘‘রমেন্দ্রনাথই প্রথম আমাকে এ কথা বলে। তার পরেই স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই।’’

রমেন্দ্রনাথবাবু জানান, দুর্গাপুরের ডিএসপি হাসপাতালে ২০০৯ সালে মস্তিষ্কের জটিল রোগে ভুগে ৫৫ বছর বয়সে তাঁর দিদি বাণীদেবীর মৃত্যু হয়। তাঁর মরণোত্তর চক্ষুদানের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। রমেন্দ্রনাথবাবুর কথায়, ‘‘নানা কারণে সেই সময়ে অন্য অঙ্গদান সম্ভব হয়নি। মধুস্মিতার মৃত্যুর পরে দিলীপবাবুকে বিষয়টি বোঝাই। অন্য অনেকের মধ্যে আমাদের মধুস্মিতা বেঁচে থাকবে, এটাই তো সান্ত্বনা।’’ এগিয়ে আসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। তাতেই প্রায় ১৭২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ সম্ভব হয়।

রমেন্দ্রনাথবাবুর এই ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন চিকিৎসকেরাও। রাজ্যে অঙ্গদান আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত চিকিৎসক অমিত ঘোষের কথায়, ‘‘ব্রেন ডেথ মানেই অঙ্গের মৃত্যু নয়, এই সচেতনতা জরুরি। শোকের মুহূর্তে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও নিকটাত্মীয়দের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। তাই সেই মুহূর্তে বিষয়টি বোঝানোর জন্য রমেন্দ্রনাথবাবুদের মতো বন্ধু, সহকর্মী বা অন্য কাউকে যথেষ্ট ভূমিকা নিতেই হয়।’’

এখানেই থেমে থাকা নয়। রমেন্দ্রনাথবাবু জানান, তিনি নিজে, তাঁর স্ত্রী ও বড় ছেলে মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Organ Donation CISF Elder Sister
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE