ভাঙড়-কাণ্ডে পুলিশের উপরে হামলা-সহ সাতটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল সিপিআই (এমএল) রেড স্টারের নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরী এবং নেতা প্রদীপ সিংহ ঠাকুরের বিরুদ্ধে। ধৃত ওই দু’জনের বিরুদ্ধে এ বার ইউএপিএ (বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন) ধারায় মামলা রুজু করল সিআইডি। শুক্রবার দু’জনকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হয়। কিন্তু শুনানি শুরুর আগেই অশান্ত হয়ে ওঠে আদালত চত্বর।
আদালতে ধৃতদের পেশের সময়ে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের নেতাকর্মী এবং পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন গ্রামগুলি থেকে আসা আন্দোলনকারীদের নিগ্রহ করে হটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অশান্তির জেরে এক সময়ে আইনজীবীরা কর্মবিরতিও ঘোষণা করে দেন। ঘণ্টাতিনেক পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিচারক ধৃতদের পাঁচ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এ দিন দেড়টা নাগাদ শর্মিষ্ঠা ও প্রদীপকে আদালতে আনে সিআইডি। তার আগেই অশান্তি ছড়ায় আদালত চত্বরে। ধৃতদের জামিনের দাবিতে সেখানে মিছিল করছিল কিছু মানবাধিকার সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তখন ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন গ্রামগুলি থেকে আসা আন্দোলনকারীরাও ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, বারুইপুর পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান গৌতম দাসের নেতৃত্বে দলীয় পতাকা নিয়ে জনা পঞ্চাশ তৃণমূল কর্মী-সমর্থক সেখানে আসেন। ‘বারুইপুরকে অশান্ত করা চলবে না’ বলে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। মানবাধিকার কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের দিকেও ধাওয়া করেন ওই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়াও পাওয়ার গ্রিড বিরোধী স্লোগান দেওয়ায় তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে এক আইনজীবী আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। এর জেরেই আইনজীবীরা কর্মবিরতি করেন।
আদালত চত্বরে পুলিশ ছিল। কিন্তু গোলমাল থামাতে তাদের এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, কেউ কোনও সাহায্য চাননি। কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। হস্তক্ষেপ করার জন্য কোনও নির্দেশও আসেনি। গোলমালের সময়ে ঘটনাস্থলে আসেন মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র। তিনি তৃণমূল কর্মীদের বলেন, ‘‘সবারই আদালত চত্বরে থাকার অধিকার রয়েছে।’’ এর পরে গোলমাল থামলেও তৃণমূল কর্মীরা আদালত চত্বর ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকেন। বারুইপুর পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘আমাদের এই প্রতিবাদ আসলে ‘দিদিমণি’র (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আন্দোলন। কোনও ভাবেই আদালত চত্বরে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy