Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Deucha Coal Mine Project

ডেউচা কয়লা প্রকল্পে পুনর্বাসন দিয়ে কাজ, আশ্বাস মুখ্যসচিবের

মহম্মদবাজার ব্লকের ডেউচা–পাঁচামিতে পাথর খাদানের নীচে জমে রয়েছে উন্নতমানের বিশাল কয়লা ভাণ্ডার।

আলোচনায়: ডেউচা প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় মুখ্যসচিব। রয়েছেন জেলাশাসকও। নিজস্ব চিত্র

আলোচনায়: ডেউচা প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় মুখ্যসচিব। রয়েছেন জেলাশাসকও। নিজস্ব চিত্র

দয়াল সেনগুপ্ত
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০৬:১৬
Share: Save:

এলাকার মানুষের পূর্ণ আস্থা অর্জন করার পরেই বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে, কয়লাখনি গড়ার কাজে হাত পড়বে বলে গত ডিসেম্বরে স্পষ্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ওই প্রস্তাবিত কয়লাখনি প্রকল্প এলাকায় এসে এলাকার মানুষের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেও সেই ইতিবাচক বার্তাই দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট করেছি, ১০০ শতাংশ পুনর্বাসন করে তবেই কাজ শুরু করব।“

মহম্মদবাজার ব্লকের ডেউচা–পাঁচামিতে পাথর খাদানের নীচে জমে রয়েছে উন্নতমানের বিশাল কয়লা ভাণ্ডার। ব্লকের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ভাঁড়কাটা, হিংলো, সেকেড্ডা, পুরাতনগ্রাম ও ডেউচার ১১টি মৌজায় সঞ্চিত সেই কয়লার পরিমাণ প্রায় ২১০ কোটি টন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে ওই এলাকার কয়লা উত্তোলনের দায়িত্ব গত ডিসেম্বরে একক ভাবে পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

সূচি অনুযায়ী এ দিন হেলিকপ্টারে সিউড়ির চাঁদমারি ময়দানে নামেন মুখ্যসচিব। সেখান থেকে ডেউচা গৌরাঙ্গিনী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে প্রথমে এলাকার মানুষের সঙ্গে তিনি বৈঠক সারেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আদিবাসী সংগঠন, প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকার বাসিন্দা-সহ মোট ৪০ জন উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যসচিবের সঙ্গী ছিলেন ভূমি ও ভূমিসংস্কার এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতরের সচিব মনোজ পন্থ, পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের এমডি পি বি সেলিম এবং বীরভূম জেলা পুলিশ-প্রশাসন কর্তারা।

বৈঠকে মুখ্যসচিব স্পষ্ট করে দেন, এলাকায় মোট সাড়ে তিন হাজার একর নিয়ে এই কোল ব্লক। পুরো প্রকল্পের জন্য দেড় থেকে দু’হাজার মানুষকে সরাতে হবে। তবে, সেই এক বারে নয়, ধাপে ধাপে কয়লা খনির কাজ শুরু হবে। তবে, কাজ শুরুর আগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম (প্রকল্পের নোডাল এজেন্সি) সমীক্ষা করে দেখবে, কোথায় কোথায় কয়লা আছে। এই কাজ পুজোর পরেই শুরু হবে বলে সূত্রের খবর।

মুখ্যসচিব এবং রাজ্য ও জেলার পদস্থ কর্তারা স্থানীয় মানুষের সঙ্গে বিশদে আলোচনা করেছেন। গোটা কয়লা প্রকল্পের বিষয়ে তাঁদের বোঝানোর পাশাপাশি সমস্ত প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। ডেউচার মতো বিশাল প্রকল্প ঠিক ভাবে রূপায়ণ করে আমরা দেশের সামনে মডেল তৈরি করব।

—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

পাঁচামির পাথর শিল্পের উপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে নির্ভরশীল লক্ষাধিক মানুষ। ফলে, কয়লা খনি হলে সেই শিল্পের কী হবে, তা নিয়ে এলাকার মানুষের মনে সংশয় আছে। নতুন শিল্পকে স্বাগত জানালেও ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন প্যাকেজ কী হবে, তাঁদের জীবন-জীবিকার কী হবে, এমন নানা প্রশ্ন এলাকায় রয়েছে। মুখ্যসচিব এ দিন স্থানীয় মানুষের সমস্ত সংশয় দূর করার চেষ্টা করেছেন। তিনি জানান, সকলের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত পুনর্বাসন প্যাকেজ দিয়েই খনি গড়ার কাজ শুরু হবে।

বৈঠকে উপস্থিত আদিবাসী সংগঠনের নেতা রবীন সরেন বলছেন, “প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকার প্রতিটি গ্রাম থেকে মোট ২০ জন মানুষ এসেছিলেন। এটা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা। তবে, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। এখন গ্রামে আলোচনা করব। তার পরে সিদ্ধান্ত।’’

এ দিন বৈঠকস্থল থেকে আধ কিলোমিটার দূরে ডেউচা ড্যামের আগে এলাকার কিছু স্থানীয় বাসিন্দা প্রস্তাবিত কয়লা শিল্পাঞ্চল বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান। একই সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের হাত দিয়ে মুখ্যসচিবকে দেওয়ার জন্য একটি স্মারকলিপিও দেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy