—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অশান্তি থামাতে রাজ্যে কোন এলাকায় কত দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে, তা ঠিক করার দায়িত্ব কেন্দ্রকেই দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলায় বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, শান্তিরক্ষায় রাজ্য ব্যর্থ, এটা মনে করলে কেন্দ্র বাহিনী মোতায়েন করতে পারে। পাশাপাশি, শান্তিরক্ষায় রাজ্যকে যথাযথ সক্রিয় হতে এবং মামলার আবেদনকারী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও আক্রান্তদের আইনজীবীরা যে ঘটনার কথা কোর্টে জমা দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে, তা নির্দেশ ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলেছে বেঞ্চ। শুভেন্দু বৃহস্পতিবার আদালতের এই নির্দেশকে ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ বলে স্বাগত জানিয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিতে গিয়ে ১৯৯৮-এ ‘নাগা পিপলস মুভমেন্ট অব হিউম্যান রাইটস বনাম ভারত সরকারের’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় অনুসরণ করেছে। শীর্ষ আদালত বলেছিল, সংশ্লিষ্ট আইনে রাজ্যকে সাহায্য করতেই কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। কোনও এলাকা অশান্ত কি না, তা চিহ্নিত করে কেন্দ্রই বাহিনী মোতায়েনের জন্য ক্ষমতাশালী। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ মনে করিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রীয়-বিধি কার্যকর হওয়া মানেই রাজ্যের ক্ষমতা অপসারণ নয়, তা-ও শীর্ষ আদালত বলেছিল।
কোর্টের নির্দেশ সামনে আসতেই শুভেন্দু এক্স হ্যান্ড্লে রাজ্যকে বিঁধেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রাজ্য-প্রশাসনের আরও একটি ব্যর্থতা সামনে এল। কোর্টের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এর ফলে, এই ‘ব্যর্থ রাজ্যে’ বহু জীবন বাঁচবে।’ যদিও পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজনই নেই। রাজ্যে সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। তবু কারও আবদারে কেউ বাহিনী রাখতে চাইলে রাজ্যের স্কুলগুলিকে ছেড়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় ভবন বা রাজভবনে তা রাখুন!”
মামলার সওয়াল-যুদ্ধে বুধবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের যুক্তি ছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা রাজ্যের এক্তিয়ারে। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা যায় কি? কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোককুমার চক্রবর্তী অবশ্য জানিয়েছিলেন, কোর্টে অনুমতি দিলে বাহিনী রাখতে কেন্দ্র প্রস্তুত। সেই সঙ্গে, শুভেন্দুর আইনজীবী সৌম্য মজুমদার, বিল্বদল ভট্টাচার্য আক্রান্ত ও ঘরছাড়াদের তালিকা কোর্টে জমা দিয়েছিলেন। আক্রান্তদের আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল জানান, কিছু ক্ষেত্রে বিরোধী দলের কর্মীদের বাড়িতে ফেরানো হলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। কোর্ট জানিয়েছে, অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে ও ফের যাতে অশান্তি না ছড়ায় সে দিকেও কড়া নজর রাখতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy