ছবি: সংগৃহীত।
কৃষকের অ্যাকাউন্টে সরাসরি নগদ টাকা পাঠানোর কেন্দ্রীয় প্রকল্প। আর দরিদ্রদের বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার ‘কভারেজ’ দেওয়ার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প। মোদী সরকারের চালু করা এই দুই প্রকল্পেরই সুবিধা মাত্র যে দু’টি রাজ্যের মানুষ পান না, তার একটি পশ্চিমবঙ্গ বলে অভিযোগ করল কেন্দ্র। ইঙ্গিত, পশ্চিমবঙ্গ শামিল না-হওয়ায় দুই প্রকল্পেরই প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেখানকার মানুষ।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিলমোহর দেওয়া চার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে গিয়েই রাজ্যের দিকে এই তোপ দাগেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। মূলত চাষের খরচ জোগাতে বছরে তিন কিস্তিতে ২,০০০ টাকা করে মোট ৬,০০০ টাকা কৃষকদের দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। জাভড়েকরের দাবি, ‘‘ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন
প্রায় সাত কোটি চাষি। অন্তত এক কিস্তির টাকা পৌঁছেছে তাঁদের অ্যাকাউন্টে। অনেকে পেয়েছেন দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় কিস্তিও। কিন্তু মাত্র দু’টি রাজ্যের কৃষকেরা এ থেকে বঞ্চিত। পশ্চিমবঙ্গ এবং দিল্লি।’’ তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নাম না-পাওয়ার কারণেই টাকা পাঠানো সম্ভব হয়নি ওই চাষিদের অ্যাকাউন্টে।
কেন্দ্রের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্প ‘কৃষকবন্ধু’ রয়েছে। কোনও কৃষকের এক একর জমি থাকলে বছরে দু’দফায় আড়াই হাজার করে পাঁচ হাজার টাকা পাচ্ছেন। এক কাঠা জমি থাকলে এক হাজার করে বছরে দু’বারে ২ হাজার টাকা পাচ্ছেন। কোনও কৃষক বা তাঁর পরিবারের সদস্যের মৃত্যু হলে (বয়স ১৮ থেকে ৬০) ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও অভিযোগ থাকলে লিখিত ভাবে আমাদের জানাক। মিথ্যা অভিযোগ করে লাভ হবে না। ইতিমধ্যেই আমরা ৪২ লক্ষ কৃষককে চেক দিয়েছি।’’
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প প্রসঙ্গেও এই দুই রাজ্যকে নিশানা করেন জাভড়েকর। তিনি বলেন, ‘‘দরিদ্ররা যাতে চিকিৎসার জন্য বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা পায়, সেই লক্ষ্যেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ পর্যন্ত ৩১ লক্ষ জন তার সুবিধা নিয়েছেন। প্রকল্পের কার্ড পৌঁছেছে সাড়ে তিন কোটি পরিবারের ঘরে। বাকি বাড়িতেও তা শীঘ্রই পৌঁছবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও যে দু’টি রাজ্যের মানুষ এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত, তারা হল পশ্চিমবঙ্গ এবং দিল্লি।’’
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে যোগ না দেওয়ার অভিযোগ নস্যাৎ করতে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আগেই বলেছিলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীতে সাড়ে সাত কোটি মানুষ উপকৃত। মুখ্যমন্ত্রী বিয়ের পরে এক জন মহিলার স্বামী, সন্তানের পাশাপাশি তাঁর বাবা-মাও যাতে প্রকল্পের সুবিধা পান, তা নিশ্চিত করেছেন। আয়ুষ্মান ভারত এ সব ভেবেছে! স্বাস্থ্যসাথী সারা দেশের কাছে মডেল প্রকল্প।’’
এ দিন জাভড়েকর জানান, যাঁরা কিসান সম্মান প্রকল্পের কিস্তির টাকা আগে পেয়েছেন, তাঁদের ফের পরের কিস্তি পেতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে বাধ্যতামূলক ভাবে আধার যোগ করতে বলা হয়েছিল ১ অগস্টের মধ্যে। কিন্তু এখনও অনেকে তা করে উঠতে পারেননি। চাষিদের সুবিধা মাথায় রেখেই ওই তারিখ পিছিয়ে
৩০ নভেম্বর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। অর্থাৎ, তার মধ্যে আধার যোগ করতেই হবে। কিন্তু অন্তত তার আগে পর্যন্ত আধার যোগ না-থাকলেও অ্যাকাউন্টে টাকা আসা আটকাবে না।
সামনেই মহারাষ্ট্র আর হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট। যেখানে কৃষক-ভোট যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। পোক্ত কৃষক-লবিও। তাই অনেকের মতে, ভোটের মুখে কিছুটা চাষিদের মন পেতেই আধার যোগ শিথিলের পথে হাঁটল কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy