পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
বিরোধীদের অভিযোগ, বাংলায় আইনের শাসন নেই। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও প্রায়ই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে খোঁচা দেন। অথচ শুক্রবার পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে ‘প্রশংসা’ কুড়োল পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতেই কেন্দ্রের শীর্ষকর্তারা জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ যথেষ্ট ভাল কাজ করছে। তবে সূত্রের দাবি, কেন্দ্রকে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক তথ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে যে রাজ্যের গাফিলতি ও দীর্ঘসূত্রতা আছে, তা-ও এ দিনের বৈঠকে স্পষ্ট হয়েছে।
এ দিনের বৈঠকে আইনশৃঙ্খলার প্রসঙ্গ উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাহের উদ্দেশে বলেন, ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করায় রাজ্য পুলিশের সাফল্য ৫০ শতাংশের বেশি। কলকাতা পুলিশের সাফল্য ৯০ শতাংশের মতো। নারী এবং শিশুদের উপর কোনও অপরাধের তদন্তে সক্রিয় থাকে রাজ্য প্রশাসন। অতি অল্প সময়ে তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ করা হয়। তাঁর দাবি, তিন দিনে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, এমন নজিরও আছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে রাজ্য ‘জিরো টলারেন্স’ মনোভাব নিয়ে চলে।
বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ পদাধিকারীরা রাজ্যের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রস্তাব দেন, এই সব তথ্য কেন্দ্রকে ‘সময়মতো’ জানালে তা সংশ্লিষ্ট অনলাইন তথ্যভাণ্ডারে ‘আপলোড’ করা যাবে। তখন গোটা দেশ তা জানতে পারবে। হবে। মুখ্যমন্ত্রী সেই সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মমতা এ দিন আরও বলেন, এক রাজ্যে অপরাধ করে বহু ক্ষেত্রে অপরাধী অন্য রাজ্যে পালিয়ে যায়। তাই রাজ্যগুলির মধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনিক স্তরে সমন্বয় বাড়ানো গেলে অপরাধীকে ধরার কাজ দ্রুত করা সম্ভব। প্রস্তাবটি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র।
পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার কয়েকটি এলাকায় এখনও মাওবাদী প্রভাব থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে তারা আর সক্রিয় নয়। সেই কারণে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বীরভূমের একাংশ কেন্দ্রের মাওবাদী তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। শুধু নতুন জেলা ঝাড়গ্রামকে সিকিয়োরিটি রিলেটেড এক্সপেন্ডিচার বা এসআরই তালিকাভুক্ত করে রেখেছে কেন্দ্র। ঝাড়গ্রাম বাদে রাজ্যের মাওবাদী প্রভাবিত বাকি সব এলাকা থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরের খবর, কোথাওই নজরদারি এবং নিরাপত্তা রক্ষার কাজে ঢিলে দেওয়া হয়নি। রাজ্য নিজেই সে কাজ করছে। এ দিন বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার নিয়ে আমি কথা বলিনি। কারণ এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy