নলিনী চিদম্বরম
সারদা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নলিনী চিদম্বরমকে কলকাতায় ডেকে পাঠাল সিবিআই। বৃহস্পতিবার ফ্যাক্স পাঠিয়ে তাঁকে জানানো হয়েছে, ১০ মার্চ সল্টলেকে এসে দেখা করতে। নলিনী নিজে আইনজীবী। তিনি দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের স্ত্রী।
গুয়াহাটিতে একটি অসমীয়া সংবাদপত্র ও একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেল চালু করার জন্য ২০১০ সালে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মনোরঞ্জনা সিংহের চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির ক্ষেত্রে মনোরঞ্জনার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন নলিনী। নলিনীর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অভিযোগ, তিনি সারদা ষড়যন্ত্রের অন্যতম শরিক। জনসাধারণকে ঠকিয়ে সুদীপ্ত বাজার থেকে যে টাকা তুলেছিলেন, সেই টাকার অংশ নিয়েছিলেন
নলিনী। সূত্রের খবর, ওই চুক্তি বাবদ এক কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন নলিনী। তা ছাড়া, চুক্তির বয়ান লেখা বাবদ আরও ৩৫ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যে কথা সিবিআই তাদের দাখিল করা শেষ চার্জশিটেও উল্লেখ করেছে। চেষ্টা করেও বৃহস্পতিবার রাতে নলিনীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।
আইনজীবী তাঁর পেশার খাতিরে চুক্তির মধ্যস্থতা করতেই পারেন এবং নিজের পারিশ্রমিক নিতেই পারেন। সেটা কি অপরাধ?
সিবিআই সূত্রের খবর, সারদার আইনজীবী হিসেবে নরেশ ভালোটিয়াও গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনিই বাজার থেকে লোক ঠকিয়ে তোলা টাকা খরচের দিশা দেখিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের দাবি, সেই একই অভিযোগ রয়েছে নলিনীর বিরুদ্ধে। সুদীপ্তর প্রায় ২১ কোটি টাকা একটি সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিন চ্যানেলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নলিনীরও ভূমিকা ছিল। সেই টাকাও বাজার থেকে বেআইনি ভাবে তুলেছিলেন সুদীপ্ত।
তা ছাড়াও সেবি-র এক অফিসার সিবিআইকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছেন, ওই চুক্তির সময়ে সেবি-র তরফে নলিনীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে সতর্ক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, সুদীপ্তর ব্যবসা খুব স্বচ্ছ নয়। ফলে, ওই ব্যবসার সঙ্গে অন্য কারও চুক্তির মধ্যস্থতা করাটা ঠিক হবে না। সূত্রের খবর, সে সময়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে এসে আট দিন ছিলেন নলিনী। সেখানেই সেবি অফিসারেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু, সেবি-র সেই সতর্কবার্তায় নলিনী কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। সুদীপ্তর সঙ্গে চুক্তি করার সময়ে মনোরঞ্জনা ছিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ মাতঙ্গ সিংহের স্ত্রী। নলিনী ছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পি চিদম্বরমের স্ত্রী। সিবিআইয়ের যুক্তি, তখন এই দু’জনের সামাজিক প্রভাব নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়। মনোরঞ্জনা এর আগেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন। গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর প্রাক্তন স্বামী মাতঙ্গ সিংহও।
নলিনীকে নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আরও কিছু ধোঁয়াশার জায়গা রয়েছে। তদন্তকারী অফিসারেরা প্রশ্ন তুলেছেন, পারিশ্রমিকের এক কোটি টাকার বাইরে চুক্তির বয়ান তৈরির ক্ষেত্রে ৩৫ লক্ষ টাকা নেন নলিনী। একটি চুক্তির বয়ান তৈরির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কত টাকা খরচ হতে পারে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই। এ বিষয়ে পেশাগত ভাবে নামকরা আইনজীবীদের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy